পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉Qo বাংলায় প্রমণ শিলিগুড়ি নামটি কোচদিগের প্রদত্ত বলিয়া অনুমিত হয়। ইহার অর্থ পাথুরে জায়গা, নিকটস্থ মহানদীতে হিমালয় হইতে আনীত প্রস্তরখণ্ডের স্তৃপ হইতে এই নামের উৎপত্তি । । o - শিলিগুড়ি সম্বন্ধে প্রায় শতবর্ষ পূৰ্ব্বে Himalayan Journals প্রণেতা বিখ্যাত উদ্ভিদতত্ত্ববিদ স্যার জে ডালটন হুকার (Sir Joseph Dalton Hooker) লিখিয়াছিলেন, “আমি শিলিগুড়ির কাছাকাছি ঢেউয়ের মত উচুনীচু কঙ্করাকীর্ণ তেরাইয়ের বনভূমির নানাস্থান পরিভ্রমণ করিয়াছি। যে অল্প সময় শিলিগুড়িতে ছিলাম, তাহা আমার কাছে বেশ ভাল লাগিয়াছিল। শিলিগুড়ির চারিদিকের ভূমি ঢেউয়ের মত উচুনীচু।” এই শহরে হিন্দুদের দেবমন্দির ও মুসলমানদের কয়েকটি মসজিদ আছে। হোটেল, ধৰ্ম্মশালা, ডাকবাংলা থাকায় এখানে যাত্রীদের আহারাদির ও বাসস্থানের কোনও অসুবিধা নাই। ব্যবসায়িগণের মধ্যে মাড়োয়ারীদের সংখ্যাই বেশী। - বর্তমান সময়ে শিলিগুড়ি একটি শ্রেষ্ঠ বাণিজ্যকেন্দ্র। এখান হইতে তিব্বতের পশম, মৃগনাভি, চা, কমলা, শালকাঠ ও অন্যান্য মূল্যবান কাঠ নানাস্থানে রপ্তানি হয়। তরাইএর কার্য্যের জন্য কার্সিয়ংএর সদর-আলার অধীন একজন ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট এখানে থাকেন। পূর্বে ইহার দপ্তর ছিল শিলিগুড়ি হইতে ৮ মাইল দক্ষিণে ফাঁসীদেওয়া গ্রামের নিকটস্থ হাসকুয়ার বা হাসখাওয়া গ্রামে। রেলপথ খুলিবার পর ১৮৮১ খৃষ্টাব্দে ইহার দপ্তর শিলিগুড়িতে উঠিয়া আসে। শিলিগুড়ি হইতে দাৰ্জিলিং হিমালয়ান রেলপথ নামক ২ ফুট গেজের রেলপথ আরম্ভ হইয়াছে; এখানে গাড়ী বদল করিতে হয়। এই রেলপথের প্রধান লাইন উত্তর-পশ্চিমে কার্সিয়ং হইয়া ৫১ মাইল দূরবর্তী দার্জিলিং গিয়াছে। একটি শাখা লাইন ৭০ মাইল দূরবর্তী পূর্ণিয়া জেলার অন্তর্গত কিষণগঞ্জ গিয়াছে। অপর একটি শাখা তিস্তা-উপত্যক দিয়া কালিম্পং অভিমুখে শিলিগুড়ি হইতে ৩০ মাইল দূরবর্তী গেলিখোলা পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। এই সকল স্থানে শিলিগুড়ি হইতে মোটরযোগেও যাওয়া যায়। পূৰ্ব্বে দাজ্জিলিং যাইতে হইলে কলিকাতা হইতে পূৰ্ব্ব-ভারত রেলপথে ট্রেণে সাহেবগঞ্জ পর্য্যন্ত গিয়া তাহার পর নৌকায় গঙ্গা পার হইয়া গরুর গাড়ী, পান্ধী বা ঘোড়ায় করিয়া গ্যাঞ্জেস্ব-হিমালয়ান রাস্ত ধরিয়া পূর্ণিয়া, কিষণগঞ্জ, তিতালিয়া ও শিলিগুড়ি হইয়া প্রায় দুই শত মাইল অতিক্রমের পর দার্জিলিং পোছাইতে হইত। ইহাতে প্রায় এক পক্ষকাল সময় লাগিত। ১৮৭৮ খৃষ্টাব্দে পূর্ববঙ্গ রেলপথ কলিকাতা হইতে শিলিগুড়ি পৌছাইলে তথা হইতে তাঙ্গা করিয়া দার্জিলিং যাইতে হইত। এইরূপ তাঙ্গার ব্যবস্থা ১৯ বৎসর চলিয়াছিল। ইতিমধ্যে এই ব্যবস্থার নানারূপ অসুবিধার জন্য ১৮৭৯ খৃষ্টাব্দে পূর্ববঙ্গ রেলপথের তৎকালীন সর্বাধ্যক্ষ মিঃ ফ্রাঙ্কলিন প্রিসটেজের পরিকল্পনা অনুযায়ী দাজ্জিলিং-হিমালয়ান রেলপথের নিৰ্ম্মাণ আরম্ভ হয়। ১৮৮০ খৃষ্টাব্দের মার্চ মাসের