পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᎼᏬᏬ ; বাংলায় ভ্রমণ কালিম্পং এর পথে- শিলিগুড়ি ছাড়িয়া শিলিগুড়ি রোড স্টেশন হইতে তিস্ত উপত্যক শাখা নির্গত হইয়াছে। শাখাটি প্রথম ১২ মাইল সমতলক্ষেত্র ও অল্প পরেই তরাইএর শালবন দিয়া গিয়াছে, এই বনে ব্যাঘ্র ও বন্ত হস্তী আছে। ইহার পর রেলপথ একটি সুন্দর সাকো দিয়া সেবক নদী পার হইয়াছে ; সাকোটি অতিক্রম করিয়াই সেবক তিস্তার সহিত মিশিয়াছে। সেবক নদীর অপর পারে শিলিগুড়ি হইতে ১৩ মাইল দূরবর্তী এই শাখার প্রথম স্টেশন সেবক। ইহার পরেই রেলপথ হঠাৎ তিস্ত উপত্যকায় প্রবেশ করিয়াছে। এই স্থানে তিস্তা পাৰ্ব্বত্যপথে গভীর ও সঙ্কীর্ণ খাদে প্রবাহিত হইয়া সমতল ভূমিতে আসিয়া পৌঁছিয়াছে। তিস্ত উপত্যকায় প্রবেশ করিলেই দেখা যাইবে যে নিবিড় জঙ্গলাবৃত তুঙ্গ পৰ্ব্বতশ্রেণী চারিদিকে ঘিরিয়া রহিয়াছে এবং নিকটেই তিস্তা তর তর করিয়া বহিয়া চলিয়াছে। শীতকালে নদীর জল যখন সবুজ রং ধারণ করে এবং উপরের বুকে পড়া লতাপাতার মধ্য হইতে শাদা পাথরগুলি উকি দিতে থাকে তখন সত্যই দৃশুটি বর্ণ বৈভবে বিচিত্র হইয়া উঠে। বর্ষাকালে জলের রং প্রায় তুধের মত শাদা হইয় উঠে এবং এত সুন্দর থাকে না ; কিন্তু ইহার পরিমাণ ও গতিবেগ অনেক বাড়িয়া যায় এবং কোথাও কোথাও স্রোতের গতি ঘণ্টায় ১৪ মাইল হইয়া উঠে। এইরূপে এই তুঙ্গ ও সঙ্কীর্ণ উপত্যক দিয়া রেলপথ পৰ্ব্বত ও জঙ্গলমধ্য দিয়া গিয়া শিলিগুড়ি হইতে ১৮ মাইল দূরে কালীঝোরা নদীর পুল অতিক্রম করে। নিকটেই কালীঝোরার জলপ্রপাতের দৃশ্য অতি মনোরম ; ৫৫০ ফুট উচ্চ পৰ্ব্বত হইতে কালীঝোরা ঝর ঝর রবে অবতীর্ণ হইয়া রেলপথের পাশেই তিস্তার সহিত মিলিত হইয়াছে। এখানকার দৃশ্ব অতি সুন্দর ; অনেকে এখানে বনভোজনে ও শিকারে আসেন। কালীঝোরার জল কৃষ্ণাভ বলিয়া ইহার এই নাম হইয়াছে। কালীঝোরার পর রিয়াং স্টেশন পেছিবার পূর্বেই তুষারাবৃত পৰ্ব্বত শ্রেণী দেখিতে পাওয়া যায়। রিয়াং নদীর পুল পার হইয়া রেলপথ ঘুরিয়া ফিরিয়া নানা কৌশলে পুলের উপরে রিয়াং স্টেশনে গিয়া পৌঁছিয়াছে। রিয়াং শিলিগুড়ি হইতে ২৫ মাইল। কয়েক বৎসর পূর্বে রিয়াং নদী এক রাত্রির মধ্যে পুরাতন খাদ ত্যাগ করিয়া নূতন খাদে বহিতে থাকে। পুরাতন পুলের স্তম্ভগুলি শুষ্ক পাথর ও মুড়ির মাঝে দাড়াইয় পুৰ্ব্বকার খাদের সাক্ষ্য দিতেছে। রিয়াং স্টেশন হইতে মাত্র ৩৪ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে রিয়াং নদীর উত্তরে অবস্থিত মংপু গ্রাম। দাৰ্জিলিং পথের সোনাদা স্টেশন হইতেও মংপু যাওয়া যায়; সোনাদ হইতে পূৰ্ব্বদিকে ১১ মাইল দূর এবং মাঝপথে ৫,৬১৫ ফুট উচ্চে অবস্থিত সরাইল বাংলা পড়ে। মংপু বঙ্গের সিন্‌কোন আবাদের সদর ও প্রধান কেন্দ্র, এই অঞ্চল সিনকেন চাষের বিশেষ উপযোগী। এখানকার বিভিন্ন আবাদের নাম, রংজো উপত্যকার রাংবী ও মংপু বিভাগ; রিয়াং উপত্যকার সিটং ও লবদ বিভাগ ও কালিম্পংএর উত্তর-পূর্বে অবস্থিত দিওলো পাহাড় হইতে পিওং পর্যন্ত রংপো উপত্যকার মুনসং বিভাগ। সিন কোনার চাষ সরকারের একচেটিয়া কারবার। ভারতবর্ষে ইহা কেবল নীলগিরি ও দাৰ্জিলিংএর পাহাড়েই হইয়া থাকে। দক্ষিণ আমেরিকার পেরু হইতে চার ও বীজ আনাইয়া নীলগিরিতেই প্রথম আবাদ সুরু ও সফল হয়। দক্ষিণ আমেরিকার অানণ্ডিজ পাৰ্ব্বত্য অঞ্চলে বনে জঙ্গলে ইহা আপনি জন্মিয় থাকে। দাৰ্জিলিংএ সিনকোন চা ধর