পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলায় ভ্রমণ 8 سالا প্রাচীন শিবলিঙ্গ ও মাধবপুরে “সঙ্কেত মাধব” নামক বিষ্ণুমূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত আছেন । N বদরিকানাথ শিবের মন্দিরটি দেখিতে অনেকটা তারকেশ্বরের মন্দিরের স্যায়। একটি উচ্চ ভূখণ্ডের উপর মন্দিরটি অবস্থিত। নিকটে একটি পুষ্করিণী আছে, উহার জল পবিত্র বলিয়া বিবেচিত হয়। এই পুষ্করিণীটির নাম শিবকুণ্ড । পুত্রাভিলাষিনী রমণীগণ সুপুত্র লাভের আশায় এখানে অবগাহন করিয়া থাকেন। বদরিকানাথের প্রাচীন নাম অম্বলিঙ্গ। বড়াশী মাধবপুর প্রভৃতি গ্রাম পূৰ্ব্বে ছত্রভোগেরই অন্তর্গত ছিল এবং তৎকালে ইহার পাশ্ব দিয়া গঙ্গা প্রবাহিত হইত। এখনও এই অঞ্চলে গঙ্গার লুপ্তপ্রায় খাত দেখিতে পাওয়া যায় এবং বর্ষাকালে ঐ খাতের বিভিন্ন অংশ জল পূর্ণ হয়। অম্বুলিঙ্গ শিবের মন্দির পূৰ্ব্বে গঙ্গর তটে অবস্থিত ছিল এবং এই স্থান অম্বুলিঙ্গঘাট নামে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। চৈতন্য ভাগবতে ছত্রভোগ ও অম্বুলিঙ্গ ঘাটের সবিশেষ বর্ণনা আছে। শান্তিপুর হইতে পুরী গমনকালে শ্রীচৈতন্যদেব যে গঙ্গাতীরের পথ ধরিয়া গমন করিয়াছিলেন, তাহ পূর্বেই বলা হইয়াছে। ছত্রভোগে আসিয়া তিনি অম্বুলিঙ্গ শিবকে দর্শন ও অম্বুলিঙ্গ ঘাটে স্নান করিয়াছিলেন। এই স্থান হইতেই নৌকাযোগে তিনি ওড়িষ্যায় গমন করেন। তৎকালে ছত্রভোগে রামচন্দ্র র্থ নামক জনৈক জমিদার বাস করিতেন। তিনিই শ্রীচৈতন্যদেবের ওড়িষ্যা গমনের ব্যবস্থা করিয়া দেন। “অন্ধুলিঙ্গ” নাম সম্বন্ধে চৈতন্য ভাগবতে বৰ্ণিত হইয়াছে যে পূৰ্ব্বে যখন ভগীরথ গঙ্গাকে আনয়ন করেন, তখন মহাদেব দীর্ঘকাল গঙ্গার বিরহে অধীর হইয়া তাহার অনুসরণ করেন এবং ছত্রভোগের নিকট আসিয়া জলরূপে র্তাহার সহিত মিলিত হন, যথা - ‘গঙ্গারে দেখিয়া শিব সেই ছত্রভোগে । বিহবল হইলা অতি গঙ্গা অনুরাগে ৷ গঙ্গা দেখি মাত্র শিব গঙ্গায় পড়িল৷ জলরূপে শিব জাহ্নবীতে মিশাইলা । 擊 鄰 彝 攀 জলরূপে শিব রছিলেন সেই স্থানে । “ অঙ্গুলিঙ্গ ঘাট” করি ঘোযে সৰ্ব্বজনে।” জনশ্রুতি, গঙ্গার স্রোত রুদ্ধ হইবার পর জলময় শিব পাষাণময় শিবলিঙ্গরূপে স্থলভাগে আবিভূত হন। . বদরিকানাথ শিবের মন্দিরের অতি নিকটে প্রাচীন ভাগীরথী গর্ভে নন্দ পুষ্করিণী বা চক্রতীর্থ অবস্থিত। কথিত আছে, শিবের সস্থিত গঙ্গার মিলন কালে জলস্রোতের গর্জন স্তব্ধ হইলে অগ্রগামী ভগীরথ সংশয়াকুলচিত্তে পুনঃ পুনঃ শঙ্খধ্বনি করিতে থাকেন ; তখন গঙ্গাদেবী স্বকরস্থিত জ্যোতিৰ্ম্ময় চক্র উত্তোলন করিয়া তাহাকে দেখান। শিবগঙ্গার মিলন স্থলে এই চক্র প্রদর্শিত হইয়াছিল বলিয়া ঐ স্থান চক্ৰতীর্থ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে। চৈত্রমাসের শুক্ল প্রতিপদ তিথিতে এই ঘটনা ঘটিয়াছিল বলিয়া শাস্ত্রে বর্ণিত আছে। প্রতিপদ, ষষ্ঠ ও একাদশী এই তিন তিথিকে নন্দ বলে। এই জন্য চক্রতীর্থের অপর এক নাম নন্দা। বর্তমানে নন্দ বা চক্ৰতীর্থ একটি সাধারণ পুষ্করিণী মাত্র। ইহার পশ্চিম দিকে একটি বাধা ঘাট আছে এবং তীরে দুই একটি দেবমন্দির আছে।