পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ Šbrግ লক্ষ্মীকান্তপুর—কলিকাতা হইতে ৩৯ মাইল দূর। ইহা সুন্দরবনের আবাদী অঞ্চলের অন্তর্গত। এই স্থান হইতে প্রচুর পরিমাণে ধান ও বিচালী প্রভৃতি চালান যায়। এই স্থান হইতে ৩৩ মাইল দূরবর্তী কাকদ্বীপ পর্য্যন্ত একটি কাচা রাস্তা আছে । শীত ও গ্রীষ্ম কালে এই পথ দিয়া মোটর বাস যাতায়াত করে । এই পথে লক্ষ্মীকান্তপুর হইতে ৬ মাইল দূরবর্তী ভাগীরথী তীরে কুলপী গ্রাম অবস্থিত। নদীর ধারে একটি উচ্চ মন্দির আকৃতির কবর আছে, ইহা মণি বিবির কবর নামে অভিহিত এবং নাবিকদিগের নিকট কুলপী প্যাগোডা নামে পরিচিত। পূৰ্ব্বে কুলপীর নিকট জাহাজের একটি নঙ্গর ফেলিবার স্থল ছিল। কবরটি একটি ইংরেজ মহিলার কবর বলিয়া কথিত । লক্ষ্মীকান্তপুর হইতে অনতিদূরে সুন্দরবনের ১১৬ নং লাটে “জটার দেউল” নামে পরিচিত একটি পুরাতন ও ভগ্নপ্রায় দেবমন্দির দৃষ্ট হয়। ইহা ৫০/৬০ হাত উচ্চ হইবে । ইহার আকৃতি ভুবনেশ্বর মন্দিরের অনুরূপ। কেহ কেহ অনুমান করেন যে ইহা একটি শিবমন্দির, আবার কাহারও কাহারও মতে ইহা কোন বৌদ্ধ চৈত্য। ইহার নিৰ্ম্মাণকাল জানা যায় নাই। জটার দেউলের নিকটে ১২৭ ও ১২৮ নং লাটে বিরিঞ্চির মন্দির, ভরত রাজার মন্দির ও ভরত গড় নামে ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। পূৰ্ব্বে সুন্দরবন অঞ্চলে ভরত নামে কোন প্রসিদ্ধ রাজা ছিলেন বলিয়া অনুমিত হয় । (দৌলতপুর দ্রষ্টব্য)। জটার দেউলের পশ্চিম দিকে ২৬ নং লাটে রায়দীঘি ও কাঞ্চনদীঘি নামে দুইটি পুরাতন ও উত্তর দক্ষিণে দীর্ঘ প্রকাণ্ড দীঘি দেখিতে পাওয়া যায়। জটার দেউলের নিকটে প্রাচীন হাতিয়াগড় অবস্থিত ছিল ; বৌদ্ধযুগে এখানে একটি প্রসিদ্ধ বিহার ছিল । কবিকঙ্কণ চণ্ডীতে বর্ণিত আছে যে ধনপতি সদাগর “হাতো-ঘরে” অম্বুলিঙ্গ শিব ও নীলমাধবের পূজা করিয়াছিলেন। গোড়াই গাজীর প্রসঙ্গে হাতিয়াগড়ের কথা পূর্বেই উল্লিখিত হইয়াছে। (বারাসাত-বসিরহাট লাইট রেলওয়ের “হাড়োয়াখাল" স্টেশন দ্রষ্টব্য) । মগরাহাট—কলিকাতা হইতে ২৫ মাইল দূর । অনেকগুলি খাল এখানে আসিয়া মিলিত হওয়ায় ইহা একটি বড় ব্যবসায়ের কেন্দ্র হইয়াছে। চাউলের কারবারের জন্য ইহা প্রসিদ্ধ। বাসুলডাঙ্গা–কলিকাতা হইতে ৩৫ মাইল দূর। স্টেশন হইতে প্রায় দেড় মাইল দক্ষিণদিকে বোলসিদ্ধি নামক গ্রামে এক প্রাচীন শিবলিঙ্গ আছেন । গ্রামের এক প্রান্তে একটি উচ্চ ভূখণ্ডের উপর শিবের মন্দির অবস্থিত। কবে কাহার দ্বারা এই শিবের প্রতিষ্ঠা হইয়াছিল তাহা জানা যায় নাই। স্থানীয় লোকে ইহাকে অনাদিলিঙ্গ বলিয়া মনে করেন। শিবের মন্দিরের চতুদিকে কতকগুলি প্রাচীন গট্টালিকাদির ভগ্নাবশেষের চিন্তু আজিও দেখিতে পাওয়া যায়। কথিত আছে, পূৰ্ব্বে এই স্থান জঙ্গলের দ্বারা সমাচ্ছন্ন ছিল। একজন সন্ন্যাসী তথায় বাস করিয়া শিবের মৰ্চনা করিতেন। সন্ন্যাসী বাকৃসিদ্ধ মহাপুরুষ ছিলেন ; তিনি যাহাকে যাহা বলিতেন