পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ Ֆե-Ֆ বা মেলায় সেরূপ হয় না। সাধুদের মধ্যে নাগা সাধুদের সংখ্যাই কিছু অধিক। এই মহাতীর্থে স্নান করিলে লোকে সর্বপ্রকার পাপ হইতে মুক্তি লাভ করে এবং এখানে স্নান, দান ও শ্রাদ্ধ তৰ্পণে অনন্ত ফল লাভ হয় বলিয়া শাস্ত্রে উল্লিখিত আছে। পুরাণ, রামায়ণ ও মহাভারতে গঙ্গাসাগরের কথা আছে । গঙ্গাসাগর হিন্দুর একটি অতি প্রিয় ও অতি পবিত্র তীর্থ। পবিত্রতায় অন্য কোনও তীর্থ ইহার সমকক্ষ কিনা সন্দেহ। এই সবিশেষ পবিত্রতার প্রধান কারণ ইহা পুণ্যতোয় গঙ্গা ও সাগরের সঙ্গমস্থলে অবস্থিত বলিয়। হিন্দুর নিকট গঙ্গা সৰ্ব্বত্রই পবিত্র এবং পবিত্র নদীর উৎস ও মুখ বা মোহানা অন্য অংশ হইতে পবিত্রতর গণ্য হয় বলিয়া গঙ্গার উৎস গঙ্গোত্রী এবং মোহানা গঙ্গাসাগর গঙ্গার অপরাংশ হইতে অধিকতর পবিত্র । গঙ্গার ন্যায় সাগরও হিন্দুর নিকট সৰ্ব্বত্রই পবিত্র, সেইজন্য তাহাদের সঙ্গমস্থল গঙ্গাসাগরের পবিত্রতা বহুমাত্রায় বদ্ধিত হইয়াছে। ইহার উপর সুপ্রসিদ্ধ কপিলমুনি কঠোর তপশ্চৰ্য্যার পর তাহার অভীষ্ট সিদ্ধি লাভ করিয়া এই স্থানকে পূত করিয়াছেন। সৰ্ব্বশেষে সগরের প্রপৌত্র ভগীরথ স্বর্গ হইতে গঙ্গাকে মৰ্ত্তে আনয়ন করিয়া এই স্থানেই কপিলমুনির শাপে ভস্মীভূত সগরের ষাট হাজার পুত্রকে গঙ্গাবারির মাহাত্ম্যে মুক্তিদান করিতে সক্ষম হইয়াছিলেন । শাস্ত্রে গঙ্গাসাগর তীর্থের মাহাত্ম্য সবিস্তারে বর্ণিত আছে। পুরাণে লিখিত আছে, রামচন্দ্রের ত্রয়োদশ স্থানীয় পিতৃপুরুষ অযোধ্যরাজ সগর নিরনব্বই বার অশ্বমেধ যজ্ঞ করিবার পর শতবার পূর্ণ করিবার জন্য পুনর্বার যজ্ঞের আয়োজন করেন । ইহাতে স্বৰ্গরাজ ইন্দ্র, যিনি নিজে শত অশ্বমেধ যজ্ঞ করিয়াছিলেন, উদ্বিগ্ন ও ঈর্ষান্বিত হইয়া উঠেন, কারণ তাহা হইলে তাহার কৃতিত্ব আর থাকিবে না। ইন্দ্র তখন যজ্ঞের জন্য ছাড়িয়া-দেওয়া সগরের অশ্বটি চুরি করিয়া কপিলমুনি যে স্থানে বাহ্যজ্ঞানশূন্ত হইয়া ধ্যানে মগ্ন ছিলেন তাহার নীচে মাটির মধ্যে একটি ঘরে লুকাইয়া রাখলেন। সগরের ষাট হাজার পুত্র নানা দিকে অন্বেষণ করিবার পর অশ্বটিকে পাইয়া মনে করিলেন কপিলমুনিই বুঝি ইহাকে চুরি করিয়াছিলেন। সেইজন্য র্তাহারা তাহাকে আঘাত করিলে তাহার ধ্যানভঙ্গ হয়। মুনি চোখ খুলিয়া র্তাহাদের দেখিয়া শাপ দিলেন। তৎক্ষণাৎ তাহারা ভস্মীভূত হইয়া নরকে নিক্ষিপ্ত হইলেন। মুনি বিধান দিয়াছিলেন যে ভস্মস্তৃপে যদি গঙ্গার ধারা লইয়া আসা যায় তাহা হইলেই শুধু মুক্তি সম্ভব। সগরের প্রপৌত্র ভগীরথ বহু তপস্যার পর গঙ্গাদেবীকে মৰ্ত্তে আনিতে সক্ষম হন। কথিত আছে ভগীরথ এইরূপে পথ দেখাইয়া সমুদ্রের নিকটবৰ্ত্তী চব্বিশ পরগণা জেলার হাতিয়াগড় পর্য্যন্ত লইয়া আসিয়া আর পথ খুজিয়া পাইলেন না। সগরপুত্ৰগণের ভৰ্ম্মে নিশ্চিতরূপে পেছিবার জন্য গঙ্গা তখন শতভাগে বিভক্ত হইয়া সমুদ্রে মিলিত হইলেন। এইরূপে গঙ্গার বিভিন্ন মোহানাগুলি ও ব-দ্বীপ সৃষ্ট হইল। একটি ধারা দিয়া সগর পুত্ৰগণের ভস্মরাশি ধুইয়া লইয়া গঙ্গাদেবী তাহাদের আত্মার সদগতি করিলেন। গঙ্গাসাগরে গঙ্গাদেবী কপিল, সমুদ্র ও ভগীরথের মূৰ্ত্তি আছে। যাত্রীরা স্নানান্তে এই মূৰ্ত্তিগুলি দর্শন করিয়া থাকেন। সম্প্রতি সাগরদ্বীপে কপিলমুনির একটি সুন্দর মন্দির নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। “Ancient System of Irrigation in Bengal” atos oogos food সেচ বিভাগের বিশেষজ্ঞ স্যার উইলিয়ম উইলকক্স মহাশয় লিখিয়াছেন যে মধ্য ও