পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ミo為 পর এই স্থানে আসিয়া বাস করিয়াছিলেন। নিকটবর্তী দেওভোগ বা দেবভোগ প্রভৃতি এা প্রাচীন শাখহাটী বা শঙ্খহাটির অন্তভুক্ত ছিল। দেবভোগের এক অংশকে বিীয়তলা বলে । স্থানীয় প্রবাদ এই স্থানে বল্লাল সেনের পিতা রাজা বিজয় সেনের বাষ্ঠী ছিল। কেহ কেহ অনুমান করেন যে বল্লাল সেনের রাজ্য পাঁচটি ভুক্তিতে বিভক্ত ছিল যথা, বঙ্গ বা পূর্ববঙ্গ, বরেন্দ্র, মিথিলা, রাঢ় ও বগড় এবং ইহাদের মধ্যে বগড়ীর প্রাদেশিক রাজধানী ছিল শেখহাটী অঞ্চলে । শাখহাটিতে লক্ষ্মণসেনের প্রতিষ্ঠিত বলিয়া কথিত ভুবনেশ্বরী দেবীর একটি বিগ্রহ বিদ্যমান। এই প্রস্তর নিৰ্ম্মিত দেবীমূৰ্ত্তি অতি সুন্দর। একখানি অখণ্ড কৃষ্ণ প্রস্তর কুঁদিয়া মূৰ্ত্তিটি নিৰ্ম্মিত। ভুবনেশ্বরী দেবীর পৌরাণিক ধ্যান অনুযায়ী পারিজাত কাননে কল্পবৃক্ষতলে মণিময় বেদীর উপর দেবী পদ্মাসনে উপবিষ্ট। দেবীর ছয়খানি হস্তে শঙ্খ, কমণ্ডলু, অঙ্কুশ, পদ্ম, পুষ্পবাণ ও বরমুদ্রা বিরাজিত, গলে রত্নহার ও মস্তকে রত্নমুকুট । শাখঙ্গটির এই প্রাচীন দেবী মূৰ্ত্তিটি বাংলার ভাস্কৰ্য্য শিল্পের অতি অপূর্ব নিদর্শন। মূৰ্ত্তিটি ৫ ফুট ও প্রস্থে ২—৫” ইঞ্চি । প্রতাপাদিত্যের অন্যতম সেনাপতি কালিদাস রায় পুষ্করিণী খননকালে মূৰ্ত্তিটি পাইয়া মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করেন। পরে এখানকার জমিদারী নানা হাত ঘুরিয়া নড়াইলের জমিদারীর অন্তৰ্ভুক্ত হইয়াছে। সিঙ্গিয়ার নিকটবর্তী জগন্নাথপুর গ্রামে বহুকাল হইতে অনেকগুলি পাঠান পরিবারের বাস আছে । সুবিখ্যাত “মহিলা” কাব্যের কবি ৬মুরেন্দ্রনাথ মজুমদার জগন্নাথপুরের অধিবাসী ছিলেন। চেঙ্গুটিয়—কলিকাতা হইতে ৮৮ মাইল দূর। চেঙ্গটিয়া স্টেশন হইতে প্রায় দেড় মাইল দূরে ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত প্রেমভাগ, তপনভাগ ও দেয়াপাড়া প্রভৃতি স্থানের সহিত অতীতের স্মৃতি বিজড়িত আছে। প্রেমভাগের চলিত নাম পম্ভাগ ; তপনভাগ ও দেয়াপাড়া ইহার বিপরীত দিকে ভৈরব নদের অপর পারে অবস্থিত । প্রেমভাগে স্বনামধন্য বৈষ্ণব গোস্বামী রূপ ও সনাতনের একটি বাসভবন ছিল । ইহাদের জন্মস্থান ছিল বাকুলায় (বর্তমান বরিশাল জেলার অন্তর্গত) ও কৰ্ম্মস্থান ছিল রাজধানী গৌড়ে । রাজ সরকারে ইহারা অতি উচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গৌড় হইতে জন্মস্থান বাকুলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য ইহার প্রায় মধ্যপথবর্তী প্রেমভাগে একটি বাটী নিৰ্ম্মাণ করেন । রূপ ও সনাতন উচ্চ রাজ কাৰ্য্য পরিত্যাগ করিয়া যখন সন্ন্যাসী হন, তৎপূৰ্ব্বে র্তাহারা গৌড় হইতে র্তাহাদের সঞ্চিত অর্থাদি প্রেমভাগের বাটতে প্রেরণ করেন এবং এই স্থান হইতে উহার যথাযোগ্য বিলি-বন্দোবস্ত করিয়া সংসার ত্যাগ করেন। প্রেমভাগ সরকার ফতেহাবাদের অন্তর্গত ছিল । এই জন্য ভক্তিরত্নাকর প্রভৃতি বৈষ্ণব গ্রন্থে এই স্থান ফতেহাবাদ নামেই উল্লিখিত হইয়াছে। প্রেমভাগে রূপ-সনাতন কর্তৃক খনিত কয়েকটি পুরাতন পুকুর, র্তাহাদের বাটীর ও দেবালয়ের ধ্বংসাবশেষ প্রভৃতি আজিও দৃষ্ট হয়। রূপ গোস্বামী “কারিকা” নামে একটি পুস্তক বাংলা গদ্যে লিখিয়াছিলেন । ইহা হইতে দেখা যায় প্রায় সাড়ে চার শত বৎসর পূৰ্ব্বেও বাংলা গদ্য বেশ মুখবোধ ও প্রসাদগুণ সমন্বিত ছিল । ধৰ্ম্মসাধনায় নিমগ্ন হইয়া রূপ ও সনাতন বৃন্দাবনে বাস করিতে থাকেন। বৃন্দাবনের সুন্দর ও স্বপ্রসিদ্ধ গোবিন্দজীর 基鲁 -,