পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&め8 বাংলায় ভ্রমণ সেনের বাজারের অদূরে কাজীর জাঙ্গাল, কাজীর দীঘি ও কাজীর দেউড়ি প্রভৃতি কতকগুলি প্রাচীন কীৰ্ত্তি আছে। আলা-উদ-দীন হুসেন শাহ যখন গৌড়ের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত তখন এই স্থানে সুবি খ ও মুচি খা নামক দুইজন কাজী ছিলেন। র্তাহাদের পিতার নাম ছিল পঞ্চরঙ্গ খা। পঞ্চরঙ্গ প্রথমে হিন্দু ছিলেন ; তাহার প্রকৃত নাম ছিল চতুরঙ্গ ভদ্র। প্রাচীন নয়াবাদ বা বৰ্ত্তমান রেণীগঞ্জের উত্তরে ভৈরব নদের তীরে ভদ্রগাতি নামক গ্রামে র্তাহার গড়বেষ্টিত ভবন ছিল । তুই একটি “জাঙ্গাল” ভিন্ন ভদ্রগাতির অন্যান্য প্রাচীন চিহ্ন ভৈরব নদের কুক্ষিগত হইয়াছে। চতুরঙ্গ ভদ্র হুসেন শাহের অধীনে উচ্চ রাজকাৰ্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। হুসেন শাহের প্রধান অমাত্য গোপীনাথ বসু বা পুরন্দর খার এক ভ্রাতুপুত্রের সহিত স্বীয় কন্যার বিবাহ দিয়া তিনি ভদ্রগাতি হইতে অৰ্দ্ধ মাইল উত্তরে অবস্থিত শ্ৰীফলতলা নামক গ্রামে কন্যা-জামাতার জন্য এক সুরক্ষিত অট্টালিকা নিৰ্ম্মাণ ও এক প্রকাণ্ড দীঘি খনন করাইয়া দেন। প্রবাদ যে গৌড় নগরে জনৈক জ্যোতিষী তাহার হাত দেখিয়া বলেন যে তাহার বিপুল সম্পত্তি র্তাহার বংশধরগণের ভোগে আসিবে না, উহা তাহার দৌহিত্র পাইবে। ইহাতে অত্যন্ত বিচলিত হইয়া তিনি একমাত্র দৌহিত্রকে গোপনে হত্যা করিবার জন্য স্বীয় পুত্রের নামে একখানি পত্র লিখিয়া জনৈক বাহকের দ্বারা প্রেরণ করেন। ঘটনাক্রমে ঐ পত্র তাহার পুত্রের হস্তে না পৌঁছিয়া দৌহিত্রের হাতে গিয়াই পড়ে। সমস্ত বৃত্তান্ত অবগত হইয়া চতুরঙ্গের দৌহিত্র মাতুল বংশের উপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হন এবং স্বীয় লোকজনসহ মাতামহের ভবন আক্রমণ করিয়া তাহাদিগকে ংশে নিধন করেন। যে পুষ্করিণী মধ্যে র্তাহাদের মৃতদেহ সকল নিক্ষেপ করা হয় তাহ লোকে আজিও দেখাইয়া থাকে। চতুরঙ্গ এই সংবাদ পাইয়া পাগলের মত হইয়া যান। কথিত আছে যে বৃদ্ধ বয়সে তিনি গৌড়ে ইসলাম ধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন এবং তখন র্তাহার নাম হয় পঞ্চরঙ্গ খা । তিনি পুনরায় বিবাহ করেন এবং তাহার মুসলমান পত্নীর গর্ভজাত পুত্রদ্বয়ের জন্য বেলফুলিয়া পরগণার কাজীর পদ যোগাড় করিয়া দেন । এই কাজীবংশের ধারা আজিও অব্যাহত আছে। চতুরঙ্গ কর্তৃক খনিত শ্ৰীফলতলা গ্রামের প্রাচীন দীঘি এখনও বর্তমান আছে । খুলনা শহর হইতে যথাক্রমে তিন মাইল ও পাঁচ মাইল দূরে হুসেনপুর ও আলুইপুর নামে দুইটি গ্রাম আছে। ঐতিহাসিকগণের মধ্যে কেহ কু বলেন যে এই দুইটি গ্রাম গৌড়েশ্বর আলা-উদ-দীন হুসেন শাহের স্মৃতি বহন করিতেছে । তাহাদের মতে হুসেন শাহের বাল্যজীবন এই আলাইপুরের নিকটবৰ্ত্তী চাদপুর গ্রামের কাজীবাড়ীতে অতিবাহিত হয় এবং এখানেই তাহার শ্বশুর বাড়ী ছিল। চাদপুর গ্রামটি অধুনা একটি নগণ্য পল্লী হইলেও এক সময়ে ইহা যে একটি সমৃদ্ধ স্থান ছিল তাহা ইহার বর্তমান অবস্থা দেখিয়াও অনুমান করিতে পারা যায়। আলাইপুর গ্রামটি ভৈরব ও আঠারবাকি নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। পূর্বে ইহা একটি বড় বন্দর ছিল। ভৈরব নদ মজিয়ী যাওয়ায় ইহা এখন একটি সামান্ত বাজারে পরিণত হইয়াছে। খুলনা হইতে দৈনিক অনেকগুলি স্টীমার সার্ভিস আছে। এখান হইতে স্টীমার যোগে পশ্চিমদিকে এই জেলার অন্যতম মহকুমা সাতক্ষীরা,উত্তরদিকে যশোর জেলার নড়াইল