পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ २९({ পরিচিত হইলেন। তাহার সৈন্যবল ক্রমশঃ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইতে লাগিল এবং সেনাবাহিনীতে গোলন্দাজ, তীরন্দাজ, বরকন্দাজ, ঢালী, আসোয়ার (অশ্বারোহী), মল্ল প্রভৃতি নানা শ্রেণীভাগ ছিল। বাঙালী, পাঠান, পর্তুগীজ, মগ, কুকী প্রভৃতি বিভিন্ন জাতীয় সৈনিক প্তাহার সেনাদলে ছিল। র্তাহার সেনাপতিগণের মধ্যে মহাবীর কালিদাস রায়, বিজয়রাম ভঞ্জ, সূৰ্য্যকান্ত গুহ, সুখময় ঘোষ, কমল খোজা ও হায়দার মনক্ল প্রধান ছিলেন । বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বড় বড় নদীর মোহনায় তাহার অসংখ্য রণতরী মুসজ্জিত থাকিত এবং রাজ্যের নানাস্থানে তিনি তুর্গ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। র্তাহার কয়েকটি প্রধান দুর্গ ছিল—ধূমঘাট দুর্গ, গড়কমলপুর, হায়দারগড়, সাগরদ্বীপ, বেদকাশী, জগদ্দল প্রভৃতি। ধূমঘাটের ৪৫ মাইল উত্তরে জাহাজঘাটায় নৌ-বিভাগের প্রধান কেন্দ্র ছিল এবং পর্তুগীজ sRì# GFSIfāR gựfā (Frederick Dudley) aẽ #fr-R সৰ্ব্বাধ্যক্ষ ছিলেন। জাহাজঘাটার ভগ্নাবশেষ এখনও দৃষ্ট হয়। ইহার কিছু উত্তরে জাহাজ নিৰ্ম্মাণ ও মেরামতের জন্য কতকগুলি ডক্‌ (Dock) ছিল ; ফ্রেডরিক ডুডুলির নামে এই স্থানটির নাম হইয়াছে ফুধলি । রাজ্যাভিষেকের কিছুকাল পরেই সম্ভবতঃ ১৫৯৯ খৃষ্টাব্দে প্ৰতাপ নিজেকে স্বাধীন বলিয়া ঘোষণা করিয়াছিলেন । এই সময়ে তিনি একটি বৃহৎ কল্পতরু দানযজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন বলিয়া কথিত । যে যাহা চাহিয়াছিল তাহাকে তাহা দেওয়া হইয়াছিল। একটি ব্রাহ্মণ র্তাহাকে পরীক্ষা করিবার জন্তা রাজমহিষীকে প্রার্থনা করিয়া বসিলে প্রতাপ বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হইয়া সত্যপালনে প্রস্তত হইলেন এবং মহিষী তাহার ইঙ্গিতে ব্রাহ্মণের সম্মুখে গিয়া দাড়াইলেন । ব্রাহ্মণ অপ্রস্তুত হইয়া ক্ষমা প্রার্থনা করিলেন এবং মহিষীকে নিজ কন্যা সম্বোধন করিয়া মহারাজাকে পুনরায় দান করিলেন। পণ্ডিতগণের ব্যবস্থামত প্রতাপ মহিষীর ওজনে অর্থ ব্রাহ্মণকে দিয়া পত্নীকে পুনঃ গ্রহণ করিলেন। প্রতাপাদিত্য বহু পণ্ডিতকে বৃত্তি দিতেন । র্তাহার সভাপণ্ডিতগণের মধ্যে র্তাহার গুরুদেব কমলনয়ন তর্কপঞ্চানন, অবিলম্ব সরস্বতী ও কবি ডিম ডিম সরস্বতী সমধিক প্রসিদ্ধ। অবিলম্ব সরস্বতীর নাম হয় মুখে মুখে বিনাবিলম্বে কবিতা রচনা করিতে পারিতেন বলিয়া । তৃতীয় ব্যক্তি প্রকাগু দার্শনিক পণ্ডিত ছিলেন, কিন্তু দ্রুত শ্লোক রচনা করিতে পারিতেন না বলিয়া নাম হয় ডিম্ ডিম্‌। ইতিমধ্যে প্রতাপের পিতা বিক্রমাদিত্যের পরলোক ঘটিয়াছিল। রাজ্য সংক্রান্ত ব্যাপার লইয়া মনোমালিন্তের ফলে প্রতাপ খুল্লতাত রাজা বসন্তরায়কে ও র্তাহার পুত্রগণকে হত্যা করেন ; কেবল একটি পুত্র রাঘব কচুবনে লুকাইয়। রক্ষা পান ; এজন্য পরে তিনি কচুরায় নামে পরিচিত হন। এই ঘটনা সম্বন্ধে প্রতাপের চরিতকারগণের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ আছে । কেহ কেহ বলেন, যে রাজা বসন্তরায়ের পুত্রেরাই প্রতাপকে প্রথম আক্রমণ করিয়াছিলেন এবং আত্মরক্ষার্থ প্রতাপ র্তাহাদিগকে ও রাজা বসন্তরীয়কে হত্যা করিতে বাধ্য হন। আবার কাহারও কাহারও মতে রাজা বসন্তরায়ের হত্যাকাণ্ড প্রতাপের স্বেচ্ছাকৃত অপরাধ। যাহা হউক, এই ঘটনার পর হইতেই প্রতাপের পতনের সূচনা হয়। কচুরায় পরে যশোহর-রাজবংশের জনৈক কৰ্ম্মচারী তুর্গাদাস নামক এক ব্যক্তির সহায়তায় আগ্রার বাদশাহের নিকট উপস্থিত হইয়। প্রতাপের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন । বাদশাহের আজ্ঞায় প্রতাপের বিরুদ্ধে ফৌজ 15 -