পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

నఫి ఆ - বাংলায় ভ্রমণ প্রেরিত হয়। প্রবাদ, যে প্রতাপ ক্রমান্বয়ে তাহার বিরুদ্ধে প্রেরিত ২২ জন বাদশাহী সেনাপতিকে যুদ্ধে পরাস্ত করেন। লোকের বিশ্বাস রাজ্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী যশোরেশ্বরীর অনুগ্রহেই তিনি এই সকল যুদ্ধ জয় করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। কথিত আছে, একদিন সুরাপানে জ্ঞান হারাইয়া প্রতাপ যখন জনৈক অসহায়া রমণীর স্তনচ্ছেদনের আদেশ দিতেছিলেন, সেই সময়ে দেবী যশোরেশ্বরী রাজকন্যার রূপ ধারণ করিয়া রাজসভায় উপস্থিত হন। স্বীয় কন্যা জ্ঞানে প্রতাপ ক্রুদ্ধ হইয়া তাহাকে চিরদিনের জন্য রাজপুরী হইতে দূর হইয়া যাইতে বলেন । “তথাস্ত” বলিয়া দেবী অন্তর্হিত হন। বিস্মিত প্রতাপাদিতা তখন দেবী মন্দিরে গিয়া দেখিতে পান যশোরেশ্বরী যথার্থই বিমুখ হইয়াছেন ; পাষাণ প্রতিমার মুখ দক্ষিণ হইতে পশ্চিমদিকে ঘুরিয়া গিয়াছে। প্রবাদ, দক্ষিণদিকের রাজ্য জঙ্গলময় হইয় উঠে এবং পশ্চিমদিকের জঙ্গল পরিষ্কৃত য়া যায় । প্রতাপের হস্তে উপযুপিরি বাদশাহী ফৌজের পরাজয় ঘটিবার পরে মুঘল সেনাপতি রাজা মানসিংহ বহু সৈন্ত সামন্ত লইয়া বঙ্গে আগমন করেন। প্রথম যুদ্ধে তাহারও পরাজয় ঘটে এবং তিনি মুন্দরবন অঞ্চল হইতে হটিয়া আসিতে বাধ্য হন । অতঃপর বর্ষাকালে খাদ্যাদির অভাবে যখন র্তাহার সেনাগণ তুর্দশার চরমসীমায় উপনীত হয়, তখন যশোহর রাজের কৰ্ম্মচারী পূৰ্ব্বোক্ত দুর্গাদাস প্রতাপাদিত্যের দুর্গের জন্য সংগৃহীত রসদ মানসিংহকে অর্পণ করেন এবং এক গুপ্ত পথ দেখাইয়। মুঘল বাহিনীকে রাজধানীর সন্নিকটে আনয়ন করেন। এই যুদ্ধে পরাজিত হইয়া প্রতাপ সন্ধি করিতে বাধ্য হন এবং মুঘলের সামন্ত রাজা হইতে স্বীকৃত হন। বসন্তরায়ের পুত্র কচু বা রাঘবরায় পিতৃসম্পত্তি ফিরিয়া পান। আকবরের মৃত্যুর পর সম্রাট জাহাঙ্গীরের রাজ্যকালে ১৬০৮ খৃষ্টাব্দে ইসলামখ বাংলার নবাব হইয়া রাজমহলে আসেন। ইনি পরে ঢাকা নগরীতে রাজধানী স্থানান্তরিত করেন। তথায় তাহার তুর্গ ও প্রাসাদের ভগ্নাবশেষ দৃষ্ট হয়। প্রতাপাদিত্য সামস্ত রাজা হইলেও সম্পূর্ণ আয়ত্তের মধ্যে ছিলেন না। র্তাহাকে দমন করিবার জন্য ইসলামখার ব্যবস্থায় সেনাপতি এনায়েৎখ বিপুল মুঘলবাহিনী লইয়া যশোহর রাজ্য আক্রমণ করেন। প্রতাপাদিত্যের নৌ-বাহিনী এই যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং সেনাপতি কমল খোজা নিহত হন। সঙ্গে সঙ্গে গুজব রটল, যশোরেশ্বরী দেবী চলিয়া গিয়াছেন। যাহা হউক, আরও কিছুদিন যুদ্ধ করিয়া জয়ের আশা নাই দেখিয়া প্রতাপাদিত্য এনায়েৎ খার শিবিরে গিয়া আত্মসমর্পণ করেন ; আশা করিয়াছিলেন এবারেও পূর্বের ন্যায় সন্ধি স্থাপিত হইবে। এনায়েৎখ তাহাকে সসন্ত্রমে গ্রহণ করেন এবং ঢাকায় প্রেরণ করেন। ইসলামখ কিন্তু তাহাকে শৃঙ্খলিত ও বন্দী করেন। র্তাহার বন্দী হওয়ার খবর শুনিয়া ধূমঘাট হতাশায় মুহমান হইয়া পড়ে। ইতিমধ্যে গ্রামবাসী নরনারীর উপর মুঘল সৈন্তগণের অত্যাচারের জন্য রাজকুমার উদয়াদিত্য শত্রুপক্ষকে পুনরায় আক্রমণ করেন এবং ঈশ্বরীপুরের নিকটস্থ নকীপুরের উত্তরে বিস্তৃত কুশলীর মাঠে শেষযুদ্ধে বীরের হ্যায় প্রাণত্যাগ করেন। এই সংবাদে রাজমহিষী শরৎকুমারী অন্যান্য স্ত্রীপরিবার ও শিশু সন্তান সহ গুপ্ত পথে নৌকা বাহিয়া তুর্গের বাহিরে যাইয়া নৌকার তলদেশে ছির করিয়া জলে ডুবিয়া জীবনাহুতি দেন। ধূমঘাট দুর্গের উত্তর পশ্চিম কোণে সেই স্থান এখনও "শরৎখানার দহ” নামে পরিচিত। এদিকে প্রতাপাদিত্য ঢাকায় কিছুদিন 15a -