পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లీe বাংলায় ভ্রমণ ব্যাসকাশী বা বেদকাশীর অনুকরণে কপোতাক্ষীর অপর পারকে বেদকাশী বলা হইত । এখানে যে সকল মন্দির ছিল তাহার অবশেষ একমাত্র ৬৭টি অতি চমৎকার প্রস্তর স্তম্ভ বৰ্ত্তমান। এখানে “ কালী খালাস খা” নামে একটি প্রকাণ্ড দীঘি আছে, ইহ দৈর্ঘ্যে ১,০০০ ফুটের উপর, প্রস্থে ৬০০ ফুট। বেদকাশী ঈশ্বরীপুর হইতে পূৰ্ব্বদিকে ১২১৪ মাইল হইবে এবং সুন্দরবনের ২১১ নং লাটে অবস্থিত। এই স্থানে প্রতাপাদিত্যের একটি তুর্গ ছিল, তাহার ভগ্নাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকের নিকট ইহা “বড়বাড়ী” নামে পরিচিত। ইহা দৈর্ঘ্যে ২২৫০ ফুট ও প্রস্থে ১২০০ ফুট। কালিয়া—খুলনা-বোয়ালমারি কিংবা খুলনা-মাদারীপুর স্টীমার পথে খুলনা হইতে প্রায় ১৮ মাইল দূরে নড়াইল মহকুমার প্রসিদ্ধ বৈদ্য-প্রধান গ্রাম কালিয়া । কথিত আছে মগ ও বর্গীর অত্যাচারের হাত হইতে রক্ষা পাইবার জন্য একটি দুর্গম জলাভূমির মধ্যে গ্রামটি স্থাপিত হয়। মহম্মদপুর-খুলনা-বোয়ালমারি স্টীমার পথে খুলনা হইতে নদী পথে প্রায় ৬৫ মাইল দূরে মধুমতী নদীর তটে যশোহর জেলায় মাগুরা মহকুমায় অবস্থিত মহম্মদপুর যশোহর জেলার একটি গৌরবের স্থান। পূর্ববঙ্গ রেলপথের কালুখালি-ভাটিয়াপাড়াঘাট শাখা লাইনের বোয়ালমারি বাজার নামক স্টেশনে নামিয়াও এই স্থানে যাওয়া যায়। বোয়ালমারি বাজার হইতে এই স্থান ৬৭ মাইল পশ্চিমে। সাহিত্য-সম্রাট বঙ্কিম চন্দ্রের “সীতারাম” নামক উপন্যাসের সহিত শিক্ষিত বাঙালী মাত্রেই পরিচিত। এই মহম্মদপুরে রাজা সীতারাম রায়ের রাজধানী ছিল। সীতারামের আদি নিবাস ছিল বীরভূম জেলায়। জাতিতে তিনি উত্তর রাঢ়ীয় কায়স্থ ছিলেন। র্তাহার পিতা উদয়নারায়ণ প্রথমে রাজমহলে নবাব সরকারে কার্য্য করতেন, পরে ভূষণ পরগণায় তহশীলদার পদে নিযুক্ত হইয়৷ আসেন। তাহার পত্নীর নাম দয়াময়ী। কাটোয়া মহকুমার অন্তর্গত মহীপতি গ্রামে দয়াময়ীর পিত্রালয়ে অনুমান ১৬৫৮ খৃষ্টাব্দে সীতারামের জন্ম হয়। উদয়নারায়ণ ক্রমে একটি ক্ষুদ্র তালুক ক্রয় করেন এবং মধুমতী নদীর অপর পারে হরিহর নগরে বাস করিতে থাকেন। হরিহর নগরে এখনও সীতারামের ভ্রাতা লক্ষ্মী নারায়ণের বংশধরগণ বৰ্ত্তমান আছেন। সীতারামের মাতা দয়াময়ী তেজস্বিনী নারী ছিলেন । কথিত আছে অল্প বয়সে একটি খড়েগর সাহায্যে এক দল ডাকাতকে তিনি পরাস্ত করিয়াছিলেন। মহম্মদপুরে আজও “দয়াময়ী তলা” নামে একটি স্থান দৃষ্ট হয়; এই স্থানে সীতারামের সময়ে বারোয়ারী উৎসব হইত। সীতারামের অভু্যদয় সম্বন্ধে নানারূপ কাহিনী প্রচলিত আছে। কেহ কেহ বলেন যে সপ্তদশ শতকের শেষভাগে বাংলার তদানীন্তন ভৌমিক রাজগণ যথা সময়ে রাজকর না দেওয়ায় দিল্লীর বাদশাহ সীতারামকে র্তাহীদের নিকট হইতে বাকী রাজকর আদায়ের জন্য সৈন্য সামন্তসহ প্রেরণ করেন। সীতারাম আসিয়া র্তাহাদিগকে যুদ্ধে পরাস্ত ও রাজ্যচ্যুত করিয়া স্বয়ং তাহাদের রাজ্য অধিকার করেন এবং পরে বাদশাহের সহিত বিবাদের ফলে তাহার পতন ঘটে। মতান্তরে সীতারাম ভূষণ পরগণার অন্তর্গত মধুমতীর পূর্বপারস্থিত হরিহরনগর নামক একটি ক্ষুদ্র তালুকের অধিপতি ছিলেন। বর্তমান মহম্মদপুরের নিকটবর্তী শ্বামনগর নামক গ্রামেও তাহার কিছু ভূ-সম্প:ি ছিল। প্রবাদ, একদিন এই স্থান দিয়া অশ্বারোহণে যাইবার সময় সীতারামের অশ্বে ।