পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলপথে বাংলাদেশ ২৩৫ িৈরতে আসিলে গুরুতর দাঙ্গা মাধিয়া যায়; মেঘ মিঞা তাহাতে নিহত হন এবং রতিরাম মেঘ মিঞার জমিদারীর বহু স্থানে লুণ্ঠন করেন। এই ঘটনার কথা স্থানীয় লোক এখনও ফুলিয়া যান নাই; তাহারা ইহা স্মরণ করিয়া বলিয়া থাকেন— মেঘা মিঞা চেগা হইল বিধি হইল বাম । ঘাটমাঝি লুটিয়া নিল বুড়া রতিরাম। বরিশাল হইতে আড়িয়লখার পথে মাদারীপুর হইয়া পালং নদী ও নরিয়া খাল দিয়া পদ্মার কুলে অবস্থিত ফরিদপুর জেলার তারপাশ পৰ্য্যন্ত দৈনিক স্টীমার যাতায়াত করে। মাদারীপুর হইতে তারপাশার পথে ফরিদপুর জেলার কয়েকটি প্রসিদ্ধ স্থান পড়ে। মাদারীপুর হইতে নয় ঘন্টার রাস্তা, পালং একটি ছোটখাট শহর হইয়া উঠিয়াছে। এখানে থানা, উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয়, দাতব্য চিকিৎসালয় প্রভৃতি আছে। পালংএর দেড় মাইল উত্তর-পূর্বে কুরাশী গ্রামে অনেকগুলি পুরাতন পুকুর, মঠ ও শিব মন্দির দৃষ্ট হয়। কিংবদন্তী যে এই গুলির প্রতিষ্ঠাতা দেওয়ান মৃত্যুঞ্জয় রায় এক কোট শিব প্রতিষ্ঠা করিয়া স্থানটিকে কাশীর সমান করিবার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন, কিন্তু কোটি পূর্ণ হইবার সময় একটি শিব অন্তহিত হইয়া যান। কোট শিব পূর্ণ হইল না বলিয়া ইহা কাশীর সমকক্ষ হইল না, সে জন্য নাকি ইহা কুরাশী নামে অভিহিত। পালংএর ৩৪ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে ছয়গা একটি ব্রাহ্মণ প্রধান গ্রাম এবং সংস্কৃত চর্চার জন্ত পূৰ্ব্ব কাল হইতে প্রসিদ্ধ। আচাৰ্য্য চূড়ামণির বংশীয় কৃষ্ণদাস সাৰ্ব্বভৌম এবং হরিচরণ বিদ্যালঙ্কার, . বৈয়াকরণ রামহরি চক্ৰবৰ্ত্তী প্রভৃতি এই গ্রামের লোক। এই স্থানে বহু নারিকেল গাছ .

  • : *:

ww. দৃষ্ট হয় বলিয়া লোকে ইহাকে নারিকেলী ছয়গাও বলিয়া থাকে। ইহার দক্ষিণ দিকের" । পাশ্বস্থ গ্রাম দেভোগে “বারভূইয়া”দের অন্যতম চাদ ও কেদার রায়ের জ্ঞাতি বংশীয়দের , ” বাস আছে। দেভোগ হইতে বুড়িরহাট পৰ্য্যন্ত রাস্তা প্রস্তুত করিবার সময়ে মাটির নীচে হইতে একটি প্রকাণ্ড প্রস্তর নিৰ্ম্মিত বৃষ পাওয়া গিয়াছিল; উহা এখন ঢাকার চিত্রশালায় আছে। পালং হইতে ৬ মাইল পূৰ্ব্বদিকে মাত্রসার একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম। এখানকার সিদ্ধপীঠ দিগম্বর তলার প্রসিদ্ধি আছে। গোসাঞি ভট্টাচাৰ্য্য নামে একজন সাধক এই পীঠে সিদ্ধি লাভ করিয়াছিলেন বলিয়া কথিত । নৈয়ায়িক গঙ্গাচরণ ন্যায়পঞ্চানন মহাশয় এই গ্রামে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। গোসাঞি ভট্টাচার্য্যের জন্মস্থান রামভদ্রপুর মাষ্ট্রসার হইতে দুই মাইল উত্তর-পূর্বে। পালং হইতে দেড় মাইল দক্ষিণে ধাতুক গ্রাম সংস্কৃত চর্চার জন্য প্রসিদ্ধ; বহু পণ্ডিত এই গ্রামে জন্সিয়াছিলেন। ইহাদের মধ্যে yচন্দ্রমণি ন্যায়পঞ্চানন সমধিক প্রসিদ্ধ ছিলেন; তাহার সময়ে স্যায় শাস্ত্রে বাংলাদেশে তিনি অন্যতম প্রধান ছিলেন। মহারাজ রঞ্জিৎ সিং ইহাকে কিছু দিনের জন্য সভাপতি করিয়া পঞ্জাবে লইয়া গিয়াছিলেন। ইহার বংশীয়গণ বহুদিন যাবৎ নবদ্বীপের প্রাধান্য মানেন নাই। ইহারা স্বপ্রসিদ্ধ ময়ূরভট্টের সস্তান বলিয়া কথিত। ইহাদের পূর্বপুরুষ বলরাম বাচস্পতি ১৬৭৫ শকাব্দে অর্থাৎ ১৭৫৩ খৃষ্টাব্দে ছয়টি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন ; ইহাদের মধ্যে শুমাঠাকুরাণী, অন্নপূর্ণ, লক্ষ্মীগোবিন্দ, শিব ও অম্বিকার মন্দির প্রধান। খামাঠাকুরাণী প্রত্যক্ষ দেবতা বলিয়। এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধি আছে। ইহার সম্বন্ধে নানা কিংবদন্তী প্রচলিত আছে। প্রবাদ একবার শত্রুদল কর্তৃক তাহার পূজারীর বাট আক্রান্ত

  1. ,