পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ২৩৯ কলক হইতে জানা যায় যে ১৬৪৩ খৃষ্টাব্দে রুদ্রনারায়ণ রায় এই কালীর প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৭৩৭ খৃষ্টাব্দে ইহার মন্দির নিৰ্ম্মিত হয়। হুলারহাট হইতে উত্তর-পূর্বে পিরোজপুর মহকুমার অন্তর্গত স্বরূপকাঠি থান হইয়া বানরীপাড়া পৰ্য্যস্ত প্রত্যহ স্টীমার যাতায়াত করে। হুলারহাট হইতে বানরীপাড়া ৪ ঘণ্টার পথ। ঝালকাঠি—খুলনা-বরিশাল স্টীমার পথে খুলনা হইতে ৮৭ মাইল দূর । মেল স্টমারে সাড়ে আট ঘণ্টার পথ। ইহা বরিশাল জেলার সদর মহকুমার অন্তর্গত একটি বিখ্যাত বন্দর। স্থানটি ঝালকাঠি ও নলচিটি নামক দুইটি নদীর সংযোগ স্থলে অবস্থিত। ইহা সেগুন কাঠের একটি বড় গঞ্জ । এখান হইতে প্রতি বৎসর বহু সহস্র টাকার দাইল, কলাই, ধান, নারিকেল ও সুপারি চালান যায়। ঝালকাঠির ৩ মাইল দক্ষিণে পোনাবালিয়া-সামরাইল গ্রামে একটি প্রাচীন শিব মন্দির আছে। এই শিব স্বয়ম্ভ, বলিয়া কথিত ও ত্র্যম্বকেশ্বর ভৈরব নামে পরিচিত। শিবরাত্রির দিন এখানে বহু যাত্রীর সমাগম হয় এবং এই উপলক্ষে খুব বড় মেলা হয়। বাখরগঞ্জ জেলার ঝালকাঠি ও বানরীপাড়া থানার লোক সংখ্যা প্রতি বর্গ মাইলে ১৩০০ এরও উপরে। (মাদারীপুর দ্রষ্টব্য)। - বরিশাল—বাখরগঞ্জ জেলার সদর শহর বরিশাল কীৰ্ত্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত এবং খুলনা হইতে জলপথে ১০৪ মাইল দূর। মেল স্টীমারে সাড়ে দশ ঘণ্টার পথ। খুলনা ও বরিশালের মধ্যে প্রত্যহ দুই বার স্টীমার যাতায়াত করে। কলিকাতা হইতে ২৪ পরগণা, খুলনা ও ফরিদপুর জেলার নানা স্থান হইয়া বরাবর খাল দিয়া বরিশাল প্রভৃতি স্থানে নৌকার চলাচল আছে। এই খাল দৈর্ঘ্যে ১,১১৭ মাইল, ইহার মধ্যে মাত্র ৪৭ মাইল কৃত্রিম । খালটি সাকুলার ও ঈসটর্ণ খাল নামে পরিচিত। এই খাল দিয়া পূর্ববঙ্গ আসাম প্রভৃতি স্থান হইতে নৌকাযোগে মাল আসিয়া থাকে। এগুলি পৃথিবীর প্রধান খাল পথের অন্যতম । কলিকাতা হইতে বরিশাল পর্য্যন্ত দুইটি খাল পথ আছে ; একটি ভাঙড় খাল দিয়া শিবসা নদীতে পড়িয়া খুলনা এবং তথা হইতে ভৈরব দিয়া পিরোজপুর হইয়া বরিশাল। অপরটি আদিগঙ্গা ও বিদ্যাধরী দিয়া ক্যানিং এবং তথা হইতে সুন্দর বনের জলপথে বরিশাল। বরিশাল শহরের নদী তীর দিয়া ষ্ট্র্যাগু রোড নামে একটি সুন্দর রাস্ত আছে । বহু লোকে সকাল ও সন্ধ্যায় এই রাস্তায় বেড়াইয়া থাকে। বরিশাল ইষ্টতে পটুয়াখালি, মাদারীপুর, চট্টগ্রাম প্রভৃতি নানা স্থানে স্টীমার যাতায়াত করে। ইঙ্গ একটি স্বাস্থ্যকর স্থান। এখানে ব্রজমোহন কলেজ নামে একটি প্রথম শ্রেণীর কলেজ, ছেলেদের জন্য দুইটি ও মেয়েদের জন্য একটি উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় ও একটি মুক-বধির বিদ্যালয় আছে। ব্ৰজমোহন কলেজটি বরিশালের স্বনামধন্য নেতা বাংলার অন্যতম সুসস্তান ৬অশ্বিনী কুমার দত্ত কর্তৃক স্বীয় পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত। র্তাহার “ভক্তি যোগ” নামক উপাদেয় গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যের একটি বিশিষ্ট সম্পদ । প্রসিদ্ধ স্বদেশী যাত্র। গানের প্রবর্তক মুকুন্দ দাস বরিশালের অধিবাসী ছিলেন।