পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(ঘ) রাণাঘাট-লালগোলাঘাট-গোদাগাড়ীঘাট-কাটিহার বীরনগর-কলিকাতা হইতে ৫১ মাইল দূর। চূর্ণনদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত ইহা একটি প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ গ্রাম। ইহার পুরাতন নাম উলা। প্রবাদ উলুবনের জঙ্গল কটিয়া গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলিয়া ইহার নাম হইয়াছিল উলা। কাহারও কাহারও মতে জ্ঞানী অর্থে ইরাণীয় শব্দ আউল হইতে উল হইয়াছে। অপর মতে আরব্য শব্দ “উলা” অর্থাৎ সর্বপ্রধান হইতে উলা নামের উৎপত্তি ; পুরাকালে এই সমৃদ্ধ গ্রামটির প্রাধান্ত নাম হইতে সূচিত হয়। খৃষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগে এতদঞ্চলে ডাকাতের অত্যন্ত উপদ্রব ছিল। উলার অধিবাসিগণ কয়েকবার ডাকাতের দল ধরিয়া প্রভূত সাহসের পরিচয় দেন বলিয়া তদানীন্তন কলিকাতা কোট্‌ অব সার্কিটের জজ সাহেবের প্রস্তাবে সরকার কর্তৃক গ্রামটিকে বীরনগর আখ্যা প্রদত্ত হয়। দ্বাদশ মন্দির, বীরনগর অতীত সমৃদ্ধির চিহ্ন স্বরূপ বড় বড় বাড়ী, দীঘি, প্রাচীন গড়ের খাত ও ভগ্নাবশেষ প্রভৃতি আজিও এখানে দৃষ্ট হয়। বীরনগরের পুরাতন খ্যাতি ও বনিয়াদী কুলমৰ্য্যাদা এ অঞ্চলে প্রচলিত গ্রাম্য ছড়াতে স্থান পাইয়াছে, যথা— উলার মেয়ে কুলকুনুটি, নদের মেয়ের খোপী ; শান্তিপুরে নথ নাড়া দেয়, গুপ্তিপাড়ার চোপ * কুল কুমুটি—কুলগৰ্ব্বিতা (নদীয়া-কাহিনী, কুমুদ নাথ মল্লিক) উলায় পূৰ্ব্বে কয়েকটি টােল বা চতুষ্পাঠী ছিল। এখানকার প্রাচীন কালের পণ্ডিতগণের মধ্যে চতুর্ভুজ ন্যায়রত্ন, কৃষ্ণরাম ন্যায়পঞ্চানন, সদাশিব তর্কালঙ্কার, শিবশিব তর্করত্ন, ভবানীচরণ ন্যায়ভূষণ, মুকুন্দমোহন ন্যায়রত্ন ও কবি দুর্গাদাস মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি উল্লেখ যোগ্য। অত্রত্য সারণ সিদ্ধান্তের দুইটি কন্যা সংস্কৃতে গভীর জ্ঞানের জন্য সেকালে খাতি লাভ করিয়াছিলেন। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সময়ে পাণ্ডিতা ও কৌলীন্য গৌরবের জন্য উলা প্রসিদ্ধ ছিল। এখানকার দ্রষ্টব্যের মধো বটবৃক্ষতলে প্রাচীন উলাইচণ্ডী দেবী, দ্বাদশ মন্দির, স্বাস্তাফিদের জোড় বাংলা, ভক্তিবিনোদ কেদার নাথ দত্ত মহাশয়ের জন্মভিটা প্রভৃতি উল্লেখ যোগ্য। উলাই চণ্ডীর পুরাতন পূজাপদ্ধতি, যথা হাড়ীজাতীয় ব্যক্তি দ্বারা চীর