পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

... ." દૂર ર&ર বাংলায় ভ্রমণ বিগ্রহের নিত্য সেবা হয়। এই বিগ্রহ কাহার দ্বারা কোন সময়ে প্রতিষ্ঠিত তাহ জানা যায় নাই। স্থানীয় লোকে ইহাকে অনাদি বা স্বয়ং-প্রকাশ বলিয় বিশ্বাস করেন। প্রতি বৎসর বৈশাখ মাসের শুক্ল চতুর্দশী তিথিতে এখানে উৎসব হইয়া থাকে। পথের পার্শ্বে একটি জঙ্গলাবৃত উচ্চ ভূখণ্ডের একাংশে নৃসিংহদেবের মন্দির অবস্থিত। মন্দিরটিও অতি প্রাচীন । মন্দির প্রাঙ্গনটির ইতস্ততঃ ভগ্ন প্রস্তর ও ইষ্টক পড়িয় আছে। অনুমান হয়, বহু পূর্বে এই দেবতার মন্দির হয়ত খুবই বড় ছিল। উহার ধ্বংসাবশেষের উপরই বৰ্ত্তমান মন্দির নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। প্রাঙ্গমের একদিকে কয়েক খণ্ড কৃষ্ণবর্ণ ও পিঙ্গলবর্ণ বেলে পাথর পড়িয়া আছে ; ইষ্টকস্তৃপের মধ্যে নানা মাপের ইট দেখিতে পাওয়া যায়, উঠাদের মধ্যে কতকগুলি আবার অতি প্রাচীন ও কারুকার্য্যখচিত। - নৃসিংহদেবের মূৰ্ত্তি এক বৃহৎ কষ্টি পাথরের উপর খোদিত। ইঙ্গার উচ্চতা প্রায় চারি ফুট ; পদতলে প্রহ্লাদ ও অঙ্কে হিরণ্যকশিপু অবস্থিত। বহু স্থানেই যুক্তিটির অঙ্গহানি ঘটিয়াছে। সাধারণতঃ অঙ্গহীন বিগ্রহের পূজা হয় না, কিন্তু লোকে এই বিগ্রহকে “অনাদি” বলয় বিশ্বাস করে বলিয়া ইহার পূজা যথা নিয়মে চলিয়া আসিতেছে। জনশ্রুতি যে এই মৃত্তির অঙ্গে একখানি পরশ পাথর ছিল, জনৈক লোভী সন্ন্যাসী উচ্চ অপহরণ করিবার জন্যই মূৰ্ত্তিটির অঙ্গহানি ঘটাইয়াছে। দেপাড়া গ্রামটি একটি প্রকাণ্ড বিলের পাশ্বে অবস্থিত। এই বিলের একাংশের নাম চামটার বিল। কয়েক বৎসর পূর্বে এই বিল হইতে একটি ব্রোঞ্জ ধাতু নিৰ্ম্মিত অতি মুন্দর উগ্রতার মুক্তি পাওয়া গিয়াছিল। অনেকে অনুমান করেন যে চামটার বিল কথাটি সম্ভবতঃ চামুণ্ডার বিল কথার অপভ্রংশ। এককালে হয়ত এই বিলের নিকটে কোন স্থানে চামুণ্ড দেবীর মন্দির ছিল।

একটি ছোট মাপের লাইন কৃষ্ণনগর সিটি হইতে এক দিকে ১০ মাইল দূরবর্তী শান্তিপুরে এবং অপর দিকে ৮ মাইল দূরবর্তী নবদ্বীপ ঘাট পর্যন্ত গিয়াছে। দীঘনগর - ছোট লাইনে কৃষ্ণনগর সিটি হইতে ৬ মাইল এবং শান্তিপুর হইতে ৪ মাইল দূর। নদীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদারের পৌত্র রাজা রাঘব প্ৰজাগণের জলকষ্ট নিবারণের জন্য এখানে একটি প্রকাণ্ড দধিক খনন করান। দীঘি হইতেই স্থানের নাম দীঘনগর হয়। ১৫৯১ শকে (১৬৬৯ খৃষ্টাব্দ) রাঘব এই দীঘির তীরে এক বিরাট মন্দির নির্মাণ করাইয়া তন্মধ্যে রাঘবেশ্বর নামে শিব প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দির গাত্রে উৎকীর্ণ একটি শ্লোকে এই বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে । আমঘাটা-কৃষ্ণনগর সিটি হইতে ৫ মাইল দূর। আমঘাটার অনতিদূরে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের প্রতিষ্ঠিত হরিহরের মন্দির অবস্থিত। এই স্থানটির পাশ্ব দিয়া পূৰ্ব্বে অলকানন্দ নামে একটি নদী প্রবাহিত হইত। ভাগীরথীর সহিত সংযোগ থাকায় ইহাণ জল গঙ্গাজলের ন্যায় পবিত্র বলিয়া গণ্য হইত। অধুনা উহার স্রোত একরূপ লুপ্ত হইয় গিয়াছে। মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্ৰ অলকানন্দার তীরে একটি সুরম্য প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করেন এবং