পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ २११ রণতরী হুগলীর বণিকদিগের জাহাজ আটক করিলে আলিবর্দী খাঁ কাশিমবাজারের কুঠি অবরোধ করেন এবং ইংরেজরা নবাবকে ১২ লক্ষ টাকা খেসারৎ দিতে বাধ্য হন। # আলিবন্দী থার একমাত্র পত্নী আদর্শ সহধৰ্ম্মিণী ছিলেন। কথিত আছে, রাজ্যের প্রধান প্রধান ব্যাপারে নবাব তাহার পরামর্শ গ্রহণ করিতেন। মহারাষ্ট্রীয়দিগের সহিত যুদ্ধের সময় আলিবর্দী খার পার্শ্বে নবাব-বেগমও যুদ্ধক্ষেত্রে গমন করিতেন এবং অপরিসীম সাহসের সহিত রণক্ষেত্রের বিপদ ও রণের সম্মুখীন হইয়া স্বামীকে উৎসাহ দান করিতেন। নবাব আলিবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর তাহার পূর্ব নির্দেশানুসারে তাহার দৌহিত্র সিরাজ-উদ-দৌলা ১৮ বৎসর বয়সে বাংলা, বিহার ও ওড়িষ্যার সিংহাসনে আরোহণ করেন। নওয়াজেস মহম্মদ খার পত্নী এবং সিরাজের বড় মাসীমা ও জোঠাইমা ঘসেটা বেগম বরাবর তাহার বিপক্ষে ছিলেন এবং তিনি যাহাতে সিংহাসন না পান তার জন্য চেষ্টিত ছিলেন। সেই জন্য সিরাজ মসনদ পাইয়া ঘসেট বেগমের মতিঝিলের প্রাসাদ আক্রমণ করিয়া তাহাকে বন্দী করেন এবং কথিত আছে নওয়াজেস মহম্মদ কর্তৃক সঞ্চিত প্রায় ৬১ লক্ষ টাকার স্বর্ণ, রৌপ্য ও অন্যান্ত ধন দৌলত কাড়িয়া লন । ইহার অল্প পরেই ইংরেজদের সহিত র্তাহার বিবাদ আরম্ভ হয় এবং তিনি তাহাদিগকে এ দেশ হইতে বিতাড়িত করিতে সঙ্কল্প করেন। ১৭৫৬ খৃষ্টাব্দের জুন মাসে তিনি কাশীমবাজারের ইংরেজদের কুঠি দখল করেন এবং এইরূপে তুপক্ষে সংগ্রাম মুরু হইয়া যায় এবং সিরাজউদ-দৌলা কলিকাতা দখল করেন । ইহার পর ক্লাইভ কলিকাতা পুনগ্রহণ করেন এবং ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দের ফেব্রুয়ার মাসে সিরাজের সহিত ক্লাইভের সন্ধি হয়। (দমদম্ ক্যন্টনমেন্ট দ্রষ্টব্য।) এই বৎসরই সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করিয়া মীরজাফরকে র্তাহার স্থানে বসাইতে মীরজাফর, জগৎশেঠ, রায় তুর্লভ, উমির্চাদ ত্রবং ক্লাইভের মধ্যে ষড়যন্ত্র হয়। ইহা স্মরণীয় যে মীরজাফর আলিবর্দী খার সংসারে থাকিয়া মানুষ হন এবং সদ্বংশজাত বলিয়া আলিবর্দী তাহার সহিত বৈমাত্রেয় ভগিনী শাখানমের বিবাহ দেন। ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দের ২৩শে জুন মীরজাফর প্রভৃতির ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতায় পলাশীর যুদ্ধক্ষেত্রে সিরাজউদ-দৌলা ক্লাইভের হস্তে পরাজিত হন। (পলাশী দ্রষ্টব্য ) সিরাজ-উদ-দৌলা যুদ্ধক্ষেত্র তইতে মুর্শিদাবাদে পলাইয়া আসিয়া পরদিন ২৪শে জুন শুক্রবার রাত্রে কিছু পরিমাণ অর্থ, অলঙ্কার ও পত্নী লুৎফউন্নিসা ও চারি বৎসরের শিশুকন্যা ওম্মৎজাহুরাকে লইয়া রাজধানী পরিত্যাগ করিয়া ভগবানগোলা হইতে নৌকাযোগে রাজমহলের দিকে যাত্র। করিলেন। ইতি মধ্যে মীরজাফর মুর্শিদাবাদে আসিয়া পৌছিলেন এবং যুদ্ধের ছয় দিন পরে ২৯শে জুন ক্লাইভ সসৈন্তে মুর্শিদাবাদে আসিয়া মীরজাফরকে সিরাজ-উদ-দৌলার শন্ত মসনদে বসাইলেন। এ দিকে সিরাজ-উদ-দৌলা তিন দিন তিন রাত অনাহারে কাটাইয়া নৌকাযোগে রাজহলের দিকে পৌছিলেন ; এই সময়ে তিনি কিছু খিচুড়ী খাইতে হেন এবং একজন সামান্য ফকির খিচুড়ী রাধিয়া দিতে রাজী হয়। এই ফকির তাহাকে চিনিতে পারিয়া গোপনে মীরজাফরের জামাতা মীর কাশিম ও ভ্রাতা মীর দাউদকে সংবাদ দিলে তাহারা সিরাজকে বন্দী করিয়া মুর্শিদাবাদে পঠাইয়া দেন। র্তাহাকে মীরজাফরের বাব হইবার পূৰ্ব্বেকার বাসস্থান জাফরগঞ্জের বাটতে বন্দী করিয়া রাখা হয়। জাফরগঞ্জ ১শিদাবাদের নিজামত কেল্লার এক মাইল উত্তরে অবস্থিত। এই জাফরাগঞ্জের বাটতে