পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/২৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮০ বাংলায় ভ্রমণ শিবির আক্রমণ করিয়া ৫ই সেপ্টেম্বর প্রাতঃকালে উহা অধিকার করিয়া লয়। নবাব পক্ষ সম্পূর্ণ পরাজিত হইয়া পলায়ন করিতে বাধ্য হয়। মীরকাসিম মুঙ্গের হইতে পলায়ন করিয়া প্রথমে অযোধ্যার নবাবের আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং রাজ্য ফিরিয়া পাইবার আশ। নিৰ্ম্মল হইলে রোহিলখণ্ড অঞ্চলে পলায়ন করেন। দারিত্র্যে এবং প্রায় অজ্ঞাতভাবে ১৭৭৭ খৃষ্টাব্দে র্তাহার মৃত্যু হয়। কথিত আছে, তাহার একমাত্র সম্পত্তি দুইখানি শাল বিক্রয় করিয়া তাহার অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। মীরকাসিমকে সিংহাসন চুত করিবার মনঃস্থ করিলে পুনরায় মীরজাফরকেই ইংরেজগণ বাংলার মসনদে বসাইবার জন্য স্থির করেন। মীরজাফর ১৭৬৩ খৃষ্টাব্দে জুলাই মাসে পুনরায় মুর্শিদাবাদে নবাব পদে অধিষ্ঠিত হন। ১৭৬৫ খৃষ্টাব্দের জানুয়ার মাসে মীরজাফরের মৃত্যু হইলে তাহার জীবিত পুত্ৰগণের মধ্যে জ্যেষ্ঠ নজম উদ্দৌলা ২০ বৎসর বয়সে মসনদ প্রাপ্ত হন। মীরজাফরের জীবিত কালেই তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্র মীরণের মৃত্যু হয়। কথিত আছে তাহার বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়। আরও কথিত হয় যে সিরাজ উদ্দৌলার মাত৷ আমীন এবং মাসীমা ঘসেট বেগমকে মীরণ ঢাকায় নৌকা ডুবাইয়া হত্যা করেন । মরিবার সময় তাহারা অভিশাপ দেন, যেন তাহার বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়। নজমউদ্দৌলার সময়ে লর্ড ক্লাইভ ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির তরফ হইতে কাৰ্য্যতঃ বাংলার সুবাদারী গ্রহণ করেন। ১৭৬৫ খৃষ্টাব্দের ১২ই অগস্ট ক্লাইভ দিল্লীর সম্রাট শাহ আলমের নিকট হষ্টতে বাংলা, বিহার ও ওড়িষ্যার দেওয়ানী প্রাপ্ত হন। নবাবের প্রাসাদের খরচ ও বিচার কার্যের ভারের জন্য বার্ষিক ৫৩, ৮৬, ১৩১, সিন্ধা টাকা বরাদ হয়। পর বৎসর লর্ড ক্লাইভ মুর্শিদাবাদে দরবার করিয়া নবাবের পাশ্বে দেওয়ান রূপে বসিয়া প্রথম পুণ্যাহ করেন। ইহার অল্প পরেই ১৭৬৬ খৃষ্টাব্দের ৮ই মে নজমউদ্দৌলা হঠাৎ মারা যান এবং র্তাহার ষোড়শ বর্ষীয় ভ্রাতা সৈফউদ্দৌলা নবাব নাজিম হন । ইহার নিজামতী বৃত্তি কমাইয়া বাষিক ৪১,৮৬, ১৩১ সিকা টাকায় নিৰ্দ্ধারিত হয়। পরবর্তী নবাব মুবারক উদ্দৌলার সময় উহা কমাইয়া ১৬ লক্ষ টাকা করা হয় এবং ১৮৮২ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত উহ ঐরূপই থাকে। মুবারক উদ্দৌলার সময়ে ১৭৯০ খৃষ্টাব্দে লর্ড কর্ণওয়ালিস বিচার কার্য্যও নবাব নাজিমের হস্ত হইতে উঠাইয়া লইয়া নিজামত আদালত মুর্শিদাবাদ হইতে কলিকাতায় স্থানান্তরিত করেন । তদবধি মুর্শিদাবাদ আর রাজধানী রহিল না এবং নবাবেরও আর রাজকীয় কোন ক্ষমতাই থাকিল না। মুবারক উদ্দৌলার পর বাবরজঙ্গ, আলিঙ্গ, ওয়ালাজ, হুমায়ুনজ ও ফেরিত্নজ বা মনসুর আলি নবাব নাজিম পদে অধিষ্ঠিত হন। শেষোক্তই মুর্শিদাবাদের শেষ নবাব নাজিম এবং তাহার সময়ে নবাব নাজিমদিগের অবশিষ্ট অধিকার খৰ্ব্ব করা হইলে ফেরিচুনজা বিলাতে গিয়া হাউস অব কমনসে অভিযোগ করেন। বিলাত হইতে ফিরিয়া আসিয়া তিনি নবাব নাজিম উপাধি পরিত্যাগ করেন। তাহার পর হইতে র্তাহার বংশীয়ের বংশানুক্রমে মুর্শিদাবাদের নবাববাহাদুর উপাধিতে ভূষিত হইতেছেন। - মুর্শিদাবাদের দ্রষ্টব্য গুলির মধ্যে উত্তর প্রান্তে অবস্থিত জাফরাগঞ্জ এবং মধ্যভাগে অবস্থিত কাটরা মসজিদ, তোপখানা, জাহানকোষ কণমান, নবাব সুজাউদ্দীনের ত্রিপলিয়া তোরণদ্বার এবং নবাব সরফরাজ খণর সমাধির কথা উপরে ব: হইয়াছে। কাটুর মসজিদের দক্ষিণে অনতিদূরে কদম শরীফ বা কদম রসুল নামে একট