পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ 'నరీ পরিচালিত হয়। এখানকার রেশমী ধুতি, শাড়ী ও রুমালের বিশেষ খ্যাতি আছে। উন্থ, .গুল বিশি, বুল বুল চশম, চাদতরী, কদমফুলী, মাপচর, কলিন্তরাহ্মী (কপোতাক্ষী ? ) প্রভৃতি নানা রকম রেশমী ও রেশমী-সূতী মিশ্র কাপড় এখানে প্রস্তুত হয়। রং করিবার জন্য এখান হইতে মট্কা মুর্শিদাবাদে প্রেরিত হয় এবং তথা হইতে মাদ্রাজ, বোম্বাই প্রভৃতি অঞ্চলে রপ্তানি হয়। জাপানী প্রভৃতি বৈদেশিক রেশমী বস্ত্রের আমদানীর জন্য এই পুরাতন শিল্পের আজ কাল ক্ষতি হইতেছে। মালদহে গভর্ণমেণ্টের প্রতিষ্ঠিত একটি সেরিকালচারাল ফাম আছে। মালদহ শহরের মধ্যে দর্শনীয় স্থান হইতেছে—রিয়াজ-উস্-সলাতীন প্রণেতা গোলাম হুসেনের কবর, চিত্রশালা, গ্রন্থাগার, রামকৃষ্ণ মিশন ও জহরতলা থান নামে পরিচিত প্রাচীন শক্তিপীঠ প্রভৃতি। মালদহের চিত্রশালায় বরেন্দ্রভূমি হইতে সংগৃহীত বহু প্রস্তর গান্ধীধৰ্ম্মশলা, মালদহ মূৰ্ত্তি ও শিলালিপি প্রভৃতি রক্ষিত আছে। অনুসন্ধিৎসুর পক্ষে ইহা একটি বিশেষ দ্রষ্টব্য বস্তু। মালদহ শহরে একটি বড় মসজিদ আছে। উহা আকবরের রাজত্বকালে জনৈক ধনী বণিক কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। মালদহ পূৰ্ব্বে শাক্ত প্রধান স্থান ছিল। এস্থানে মঙ্গলচণ্ডী, কালী ও সর্বমঙ্গলদেবীর পূজার বেদী সৰ্ব্বত্র দেখা যাইত এবং বাশুলি, মশান-চামুণ্ড প্রভৃতি অনেক পিশাচদেবতার পূজা হইত। শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে মালদহ জেলার অনেকেই বৈষ্ণব মত অবলম্বন করিয়াছেন। এখন মালদহকে একটি বৈষ্ণবপ্রধান স্থান বলা যাইতে পারে। স্ত্রীচৈতন্যদেব ও নিত্যানন্দের পুত্র বীরভদ্র গোস্বামী মালদহে আসিয়াছিলেন। মোক্‌জম শাহ, কুতুব শাহ ও পিরাণপীর (আখিসেরাজ) এই তিন জন পীর মালদহে বিশেষ বিখ্যাত। স্থানীয় হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ইহাদের বিষয়ে নানারূপ গল্প ও কাহিনী শুনিতে পাওয়া যায়। গল্প আছে, মোকতুম শাহ বাঘের উপর চড়িয়া বেড়াইতেন এবং খড়ম পায়ে দিয়া নদী পার হইতেন।