পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মালদহের “গম্ভীরা” নামক লোক সঙ্গীত জনসমাজে বিশেষ সমাদৃত। অতি প্রাচীন কাল হইতেই ইহার প্রচলন আছে। সাধারণতঃ বৎসরের শেষে চৈত্র মাসের শে: তিন দিন এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। একটি সামিয়ানার নীচে শিবের মূৰ্ত্তি স্থাপন করিয় এই উৎসব পালিত হয় এবং বিগত বৎসরের প্রধান প্রধান ঘটনাবলী নৃতা, গীত । অভিনয় সহযোগে সমালোচিত হয়। দিনাজপুর অঞ্চলের শিব ভক্ত বাণরাজা এই উৎস প্রচলন করেন বলিয়া কথিত। পূর্বে হিন্দু ও মুসলমানগণের পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে গম্ভীর রচিত হইত। রুচি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পৰে সমসাময়িক সমাজনৈতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন এই সঙ্গীতের বিষয়ীভূত হইয়াছে। মালদহ স্টেশনের কাছে একটি ধৰ্ম্মশালা আছে। তিন দিন পর্য্যন্ত তথায় বিন ভাড়ায় থাকিতে পারা যায়। এতদ্ব্যতীত শহরের মধ্যে একটি পান্থশালা আছে। এই পান্থশালায় দৈনিক এক পয়সা করিয়া ভাড়া হিসাবে দিতে হয়। মালদহ শহরে মাড়োয়ারীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত গান্ধী ধৰ্ম্মশালা নামে একটি বড় ধৰ্ম্মশালা আছে। হিন্দুমাত্রেই এখানে বিনা ভাড়ায় তিন দিন পর্যাস্ত থাকিতে পারেন। এই ধৰ্ম্মশালাটি বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। মালদহ শহরে হিন্দু ও মুসলমানের হোটেলের অভাব নাই। মালদহের মোহনভোগ, রসকদম্ব ও খাজার বেশ নাম আছে । মালদহ হইতে নৌকাপথে ৬ মাইল দক্ষিণে মহানন্দার দক্ষিণ কুলে ভোলাহাট একটি বৃহৎ গ্রাম ; ইহা একটি রেশম শিল্পের কেন্দ্র। গ্রামের প্রধান রাস্তার উপর গৌড় হইতে আনীত একটি সুন্দর কারুকার্য মণ্ডিত ক্ষোদিত প্রস্তরখণ্ড দেখিতে পাওয়া যায়। /..." S ८१ोड़ -हेराबङ বাজার বা বৰ্ত্তমান মালদহ শহর হইতে বাংলার বৌদ্ধ, হিন্দু ও মুসলমান যুগের রাজধানী ১০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। গৌড়ের শেষ সীমানা ইংরেজ বাজার হইতে ১৪ মাইলেরও অধিক। বরাবর পাকা রাস্ত আছে এবং ট্যাক্সি, বাস বা গরুর গাড়ী করিয়া সহজেই এই বিস্তীর্ণ পরিত্যক্ত প্রাচীন রাজধানী দেখিয়া আসা যায়। বদ্যা হইতে রক্ষা করিবার জন্য শহরের চারি দিকে তৎকালে যে বাধ দেওয়া হইয়াছিল উহা এখনও বৰ্ত্তমান ; দৈর্ঘ্যে উত্তর-দক্ষিণে উক্ত সাড়ে সাত মাইল এবং প্রস্থে পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় দুই মাইল । গৌড় নামের প্রসিদ্ধি ও প্রাচীনত্ব সম্বন্ধে “বাংলার সাধারণ পরিচয়” অধ্যায়ে পূর্বেই উল্লেখ করা হইয়াছে। গৌড় নাম এত প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল যে প্রাচীন কালে ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঁচটি গৌড়ের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। স্কন্দ পুরাণে পঞ্চ গৌড়ের উল্লেখ আছে; ইহাদের মধ্যে বাংলা দেশের গৌড়ই সমধিক খ্যাতি লাভ করিয়াছিল। বাংলার প্রাচীন হিন্দু নৃপতিগণের মধ্যে অনেকেরই “পঞ্চ গৌড়েশ্বর" উপাধি দেখিতে পাওয়া যায়। পুরাণে বর্ণিত আছে যে সূৰ্য্যবংশীয় রাজা মান্ধাতার দৌহিত্র গৌড় এই ভূভাগের রাজা ছিলেন। যোগবশিষ্ঠ রামায়ণে গৌড়ের এবং গৌড়ভট্টদিগের লগুড় যুদ্ধে বিশেষ পারদর্শিতার কথা আছে। এ অঞ্চল পুরাকালে গুড়ের কারবারের জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করায় গুড় হইতে গৌড় নামের উৎপত্তি হইয়াছে বলিয়া কেহ কেই