পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రీ বাংলায় ভ্রমণ সুবর্ণগ্রামের শাসনকৰ্ত্তা ফখর-উদ্দীন মবারক শাহ যুদ্ধে নিহত হন এবং তাহার আত্মীয় ও অনুচরগণ ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়েন ; কেবল জামাতা জাফর খা সমুদ্রপথে পলাইয়া সিন্ধু প্রদেশে তত্তায় উপস্থিত হন এবং তথা হইতে দিল্লী গিয়া বাদশাহ ফিরোজ শাহ তোগলকের অনুগ্রহ লাভ করিয়া উজীর পদ প্রাপ্ত হন । র্তাহার পরামর্শে ও প্ররোচনায় বাদশাহ দ্বিতীয় বার ১৩৫৯ খৃষ্টাব্দে ৭০ হাজার অশ্বারোহী, ৪৭০টি হস্তী ও অসংখ্য পদাতিক সৈন্য লইয়া গৌড় আক্রমণে যাত্রা করেন। পথে জৌনপুরে ৬ মাস অবস্থান করিয়া গৌড়ে আসিতে আসিতে সুলতান শম্স্উদ্দীন ইলিয়াস শাহ পরলোক গমন করেন এবং র্তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিকন্দর শাহ গোঁড়বঙ্গের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। প্রবাদ অনুসারে সিকন্দর শাহ শম্সউদ্দীন ইলিয়াস শাহের হিন্দু মহিষী ফুলমতী বেগমের পুত্র। ফিরোজ শাহ তোগলক আসিয়া পৌছিলে সিকন্দর শাহ পিতার হার একডাল দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করেন। বাদশাহী সেনা তৃতীয় বার একডালা তুর্গ অবরোধ করে। এবারও দুর্গ অজেয় রহিল। অবশেষে সন্ধির কথাবাৰ্ত্ত সুরু হইল ; বাদশাহের পক্ষ হইতে রাষ্ট্রনীতিকুশল হয়বৎ খা নামক একজন বাঙালী গৌড় রাজ সিকন্দর শাহের নিকট দূত হইয়া গিয়া সন্ধির সওঁ সম্বন্ধে আলোচনা করেন। সম্রাট ফিরোজ শাহের প্রস্তাব মত স্থির হয়, সিকন্দর শাহ জাফর খাকে তাহার শ্বশুরের রাজ্য মুবর্ণগ্রাম বা পূর্ববঙ্গ ফিরাইয়া দিবেন এবং সম্রাট দিল্লী ফিরিয়া যাইবেন । কিন্তু জাফর খা শেষ পৰ্য্যন্ত রাজ্য গ্রহণে স্বীকৃত হন নাই, কারণ তথায় তাহার কোনও বন্ধু বা অনুচর ছিল না। তখন হইতে সিকন্দর শাহ ও র্তাহার বংশীয়গণ গৌড় ও পূর্ববঙ্গ সমগ্র রাজ্যের অপ্রতিদ্বন্দ্বী অধীশ্বর হন। সম্রাট ফিরোজ শাহ তোগলক দিল্লী ফিরিয়া যাইবার পর প্রায় জুই শতাব্দী কাল বাংলার স্বাধীন সুলতানগণের দিল্লীর বাদশাহের সহিত কোনও সম্বন্ধ ছিল না। সুলতান সিকন্দর শাহ পাণ্ডুয়ার সুপ্রসিদ্ধ আদিনা মসজিদ নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। (আদিনা স্টেশন দ্রষ্টব্য।) সিকন্দর শাহ বাংলা দেশ জরীপ করিয়া রাজস্ব নির্ণয় করেন ; র্তাহার প্রবর্তিত গজকাটি সিকন্দরী গজ নামে আজিও পরিচিত। তিনি নিজে দীর্ঘকায় পুরুষ ও ধৰ্ম্মপ্রাণ ব্যক্তি ছিলেন, এজন্য সিকন্দর চৌহাত ও পীর নামে অভিহিত হইতেন। ১৩৬৭ খৃষ্টাব্দে তাহার বিদ্রোহী পুত্র গিয়াস উদ্দীন আজম শাহের সহিত যুদ্ধে সিকন্দর শাহ পরাজিত ও নিহত হন। কথিত আছে শম্সউদ্দীন ইলিয়াস শাহ ও তৎপুত্র সিকন্দর শাহের ফৌজদার কংসরামের বজ্ৰবাহু জনাৰ্দ্দন নামে এক বীর পুত্র ছিলেন। নানা যুদ্ধে তিনি সাহসিকতার জন্য খ্যাত হইয়াছিলেন। ত্রিপুরা ও আরাকান রাজের মধ্যে যুদ্ধ হইলে তিনি আরাকান রাজের পক্ষে যুদ্ধ করিয়াছিলেন। পরে আরাকান রাজকন্যা মেীসংকে বিবাহ করিয়া সিংহলে গমন করেন এবং সেখানকার রাজা হন ; এই কাহিনী অনুসারে বিজয় সিংহের প্রায় দুই হাজার বৎসর পরে আর একজন বাঙালী সিংহলের সিংহাসন অধিকার করেন। গিয়াস-উদ্দীন আজম শাহ ধৰ্ম্মভীরু ও ন্যায়নিষ্ঠ রাজা ছিলেন। কথিত আছে একদিন শিকারকালে গিয়াস-উদ্দীনের নিক্ষিপ্ত একটি তীর দৈবক্রমে একটি বালককে নিহত করে। বালকের অসহায়া বিধবা মাত কাজী সিরাজ-উদ্দীনের নিকট বিচার প্রার্থনা করিলে, অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া মুলতানকে আদালতে উপস্থিত হইবার জন্য কাজী সাহেব একজন হরকরা প্রেরণ করিলেন। হরকরা সুলতান সমক্ষে যাইতে সাহস