পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ව එං 8 ংলায় ভ্রমণ সমাহিত করিতে চাহিয়াছিলেন । রাজা গণেশ ৭ বৎসর রাজত্ব করিয়া অনুমান ১৪১৪ খৃষ্টাব্দে পরলোক গমন করেন। রাজা গণেশ একজন অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন ও বিশেষ শক্তিশালী পুরুষ ছিলেন ইহা নিঃসন্দেহ। তাহার সময় হইতে গৌড়বঙ্গে পুনরায় সংস্কৃত চর্চা আরম্ভ হয় এবং বাংলা ভাষারও উন্নতির সূত্রপাত হয় । রাজা গণেশের মৃত্যুর পর তাহার পুত্র যত্ন জলাল-উদ্দীন মহম্মদ শাহ নাম লইয়া সিংহাসনে আরোহণ করেন। তবকাৎ-ই-আকবরী অনুসারে যছ রাজ্যলোভে মুসলমান হইয়াছিলেন। আবার প্রবাদ অনুসারে প্রাক্তন মুসলমান সুলতান বংশের কোন কুমারীর প্রেম মুগ্ধ হইয়া তিনি মুসলমান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন । র্তাহার পত্নীর নাম আসমানতার, মতান্তরে ফুলজানি বেগম। ১৪১৫ খৃষ্টাব্দ হইতে জলাল-উদ্দীন মহম্মদ শাহ ফিরোজাবাদ টাকশালে নিজ নামে মুদ্রাঙ্কিত করিতে থাকেন। জলাল-উদ্দীন মহম্মদ শাহের তৃতীয় রাজ্যাঙ্কে ১৪১৮ খৃষ্টাব্দে কায়স্থবংশীয় দনুজমর্দন দেব পাণ্ডুয়া হইতে জলাল-উদ্দীনকে বিতাড়িত করিয়া গৌড়রাজ্য অধিকার করিয়াছিলেন। আদিনা মসজিদের ৩ ৪ মাইল উত্তর পূর্ব কোণে দনুজমর্দন দেবের একটি রজত মুদ্র আবিষ্কৃত হইয়াছে। ইহার কথা “কলিকাতা-খুলনা-বাগেরহাট” অধ্যায়ে বিস্তারিত বলা হইয়াছে। দুই তিন বৎসরের মধ্যেই দনুজমর্দনদেবের মৃত্যুর পর জলাল-উদ্দীন পুনরায় সমগ্র গৌড়বঙ্গ অধিকার করেন ; চট্টগ্রামে আবিষ্কৃত র্তাহার মুদ্র হইতে জানা যায় যে তাহার আধিপত্য সুদূর চট্টগ্রাম পৰ্য্যন্ত বিস্তৃত ছিল। র্তাহার রাজাকালে রাজধানী পাণ্ডুয়ার গৌরব ও সৌন্দৰ্য্য বহুরূপে বৰ্দ্ধিত হইয়াছিল এবং ইহা সুবিস্তৃত জনবহুল নগরীতে পরিণত হইয়াছিল এবং গোড়ও পুনরায় সমৃদ্ধিলাভ করিয়াছিল। সতের বৎসর রাজত্বের পর তাহার মৃত্যু হইলে র্তাহার পুত্র শামসউদ্দীন আহম্মদ শাহ, সিংহাসনে আরোহণ করেন। পাণ্ডুয়ার প্রসিদ্ধ একলাখী সমাধি মন্দিরে জলাল-উদ্দীন মহম্মদ শাহ, তাহার পত্নী ও পুত্র শামসউদ্দীন আহম্মদ শাহকে সমাহিত করা হয় । কিংবদন্তী প্রচলিত আছে, যে সুলতান জলাল-উদ্দীন মহম্মদ শাহের পত্নী আসমানতারা পুত্র সুলতান শামসউদ্দীন আহম্মদ শাহের মৃত্যুর পর গণেশ বংশীয় মুসলমান শাখা লুপ্ত হইলে শ্বশুরের ভিটা ভাতুড়িয়ায় আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং হিন্দু বিধবাদের মত কৃচ্ছসাধন করিতেন। সুলতান শামসউদ্দীন আহম্মদ শাহকে হত্যা করিয়া স্থপ্রসিদ্ধ সুলতান শামসউদ্দীন ইলিয়াস শাহের বংশীয় নাসিরউদ্দীন মহমুদ শাহ গৌড় সিংহাসন অধিকার করেন। তিনি রাজধানী পুনরায় গৌড়ে ফিরাইয়া লইয়া যান। গৌড়ের সুপ্রসিদ্ধ কোতওয়ালী দরওয়াজ নাসিরউদ্দীন মহমুদ শাহ নিৰ্ম্মাণ করেন। র্তাহার মৃত্যুর পর তাহার পুত্র রুকন উদ্দীন বারবক শাহ ১৪৬১ খৃষ্টাব্দে গৌড় সিংহাসনে আরোহণ করেন। ইহার সময় হইতে প্রাসাদ রক্ষায় হাবশী ক্রীতদাস নিযুক্ত হয়। আরবদেশীয় ইসমাইল গাজী নামক ইহার সেনাপতি গৌড়ের উত্তরে ছুটিয়াপটিয়া নামক একটি জলাভূমি বা নদীর উপর বহু আয়াসে একটি সেতু নিৰ্ম্মাণ করিয়া যশস্বী হন। ইসমাইল গাজী ওড়িষ্যা ও কামরূপ রাজ্য আক্রমণ করিয়াছিলেন। কথিত আছে, হুগলী জেলার অন্তর্গত মন্দারণের রাজ গজপতি বিদ্রোহী হইলে ইসমাইল গাজী তাহাকে পরাস্ত করেন এবং পরে ঘোড়াঘাটে হিন্দু সেনাপতি ভান্দসী রায়ের চক্রান্তে বারবক শাহের আদেশক্রমে নিহত হন। র্তাহার দেহ হুগলী জেলার মন্দারণে এবং মস্তক রংপুর জেলার কাটাহুয়ার গ্রামে সমাহিত আছে। রুকন-উদ্দীন বারবক শাহের রাজত্বকালে গৌড়ে শান্তি