পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ ൾം ി বিপ্রদাসের “মনসা মঙ্গল” রচিত হয়। বিপ্রদাস গ্রন্থের পুস্পিকায় লিখিয়াছেন “নৃপতি হুসেনশা গৌড়ে সুলক্ষণ” বিজয় গুপ্তের “পদ্মাপুরাণ” গ্রন্থে হুসেনশাহের গুণাবলীর উল্লেখ আছে। হুসেনশাহের পুত্র নসরৎশাহ “ভারত পাঞ্চালী” নামে মহাভারতের অনুবাদ করাইয়াছিলেন। কবীন্দ্র পরমেশ্বর তাহার মহাভারতে লিখিয়াছেন – শ্ৰীযুত নায়ক সে যে নসরৎখান। রচাইল পাঞ্চালী যে গুণের নিদান ॥ হুসেন শাহ পুত্র নসরৎ শাহকে সেনাপতি পরাগল খাঁর সহিত চট্টগ্রামে মগদিগকে দমন করিবার জন্য প্রেরণ করেন। এই পরাগলখার আদেশে চট্টগ্রামের সুপণ্ডিত কবীন্দ্র পরমেশ্বর মহাভারতের অনুবাদ করেন ; এই মহাভারত “ পরাগলী মহাভারত ” নামে খ্যাত। পরাগলখার মৃত্যুর পর তৎপুত্র ছটি খাঁ চট্টগ্রাম অঞ্চলে হুসেনশাহের সেনাপতি নিযুক্ত হন। র্তাহার আদেশে চট্টগ্রামের শ্ৰীকর নন্দী মহাভারতের অশ্বমেধ পৰ্ব্ব অনুবাদ করেন। হুসেনশাহ ও নসরৎশাহের নিকট বাংলা সাহিত্য বিশেষ ঋণী। কৃতজ্ঞ বাঙালী কবি র্তাহাদিগকে পদাবলীতে পর্য্যস্ত স্থান দিয়া সম্মান করিয়াছেন ; ইহা কম গৌরবের কথা নয়। যথা “ শ্ৰীযুক্তহসন জগতভূষণ, সোহ এ রস জান। পঞ্চ গৌড়েশ্বর ভোগপুরন্দর ভণে যশরাজ খান ॥”
- সে যে নসিরা শাহ জানে । যারে হানিল মদন বাণে ॥ ”
( দীনেশচন্দ্র সেন কৃত : বঙ্গভাষা ও সাহিত্য”) ১৫৩২ খৃষ্টাব্দে নাসিরউদ্দীন নসরৎ শাহের মৃত্যুর পর তাহার পুত্র আলাউদ্দীন ফিরোজ শাহ তিন মাসকাল রাজত্ব করিয়া পিতৃব্য গিয়াসউদ্দীন মহমুদ শাহ কর্তৃক নিহত হন। গিয়াসউদ্দীন মহমুদ শাহের রাজত্বকালে সুপ্রসিদ্ধ শের শাহ অত্যন্ত প্রবল হন এবং ১৫৩৮ খৃষ্টাব্দের ৬ই এপ্রিল র্তাহার সৈন্যগণ গৌড় অধিকার ও লুণ্ঠন করে। মহমুদ শাহ সম্রাট হুমায়ুনের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করেন। হুমায়ুন সসৈন্তে গৌড়াভিমুখে যাত্রা করেন, পথে মহমুদ শাহ তাহার সহিত মিলিত হন। ভাগলপুরের নিকট কহলগাও গ্রামে পৌঁছিলে সংবাদ আসে মহমুদ শাহের বন্দী পুত্রদ্ধয় গৌড়ে নিহত হইয়াছেন। ইহা শুনিয়া বাংলার শেষ স্বাধীন সুলতান গিয়াসউদ্দীন মহমুদ শাহ ১৫৩৮ খৃষ্টাব্দে শোকে অভিভূত হইয়া কহলগাঁওয়ে প্রাণত্যাগ করেন। গৌড়ের জান জান মিয়ার মসজিদ গিয়াসউদ্দীন মহমুদ শাহ কর্তৃক ১৫৩৪-৩৫ খৃষ্টাব্দে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। মহমুদ শাহের মৃত্যুর পর ১৫৩৮-৩৯ খৃষ্টাব্দে হুমায়ুন গৌড় নগর অধিকার করেন। তিনি গৌড়ের “জন্নতাবাদ” বা স্বৰ্গপুরী এই নামকরণ করেন। শেরশাহ গৌড়ের লুষ্ঠিত সম্পত্তি রোতাস দুর্গে স্থানান্তরিত করেন। গৌড়ে তিন মাস অবস্থান করিবার পর সৈন্যাদি অনেকে পীড়িত হইয়া পড়িলে হুমায়ুন আগ্র অভিমুখে যাত্রা করেন। এই যাত্রায় হুমায়ুন ছাপারঘাট নামক স্থানে শেরশাহের নিকট পরাজিত হন এবং গঙ্গায় পড়িয়া পলায়নকালে