পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ \రిధి సె ইংরেজ বাজার শহর হইতে দক্ষিণে যে পথ কানসাট অভিমুখে গিয়াছে, ঐ পথের তিন চারি মাইল অতিক্রম করিলেই গৌড় নগরীর সীমানা আরম্ভ হয়। ঐ স্থান হইতে পশ্চিমে তিন মাইল অতিক্রম করিলে সাল্লাপুরের প্রাচীন ভাগীরথীর স্নানের ঘাট, বল্লালভিট ও বড়সাগরদীঘি পাওয়া যায়। ইহাদের কথা আগে বলা হইয়াছে। ইহাদের কাছেই দ্বারবাসিনী দেবীর মন্দির। বড়সাগরদীঘির ধারে মখ মশেখ অখি সিরাজউদ্দীন নামক একজন সাধকের সমাধি আছে। সুলতান হুসেন শাহ নিৰ্ম্মিত একটি ফটক এখনও দেখিতে পাওয়া যায়। নিকটেই হুসেন শাহের পুত্র ও নসরত শাহের অনুজ সুলতান গিয়াসউদ্দীন মহমুদশাহ নিৰ্ম্মিত জান জান মিয়ার মসজিদ। সাল্লাপুরের দিকে না গিয়া সোজা দক্ষিণে ইংরেজ বাজার হইতে ৭৮ মাইল অতিক্রম করিলেই গৌড়ের ধ্বংসাবশেষের নিদর্শন সমূহ একে একে নয়নগোচর হইতে থাকে । ইংরেজ বাজার হইতে সাত-সাড়ে সাত মাইল দূরে পথিপার্শ্বে একটা ঘেরা স্থানের মধ্যে হুইট প্রস্তরস্তম্ভ দেখিতে পাওয়া যায়। ঐ দুইটি সরকারী পূৰ্ত্তবিভাগ কর্তৃক সংরক্ষিত। কেহ কেহ বলেন, ঐ দুইটিতে পূৰ্ব্বে অপরাধীকে শূলে দেওয়া হইত এজন্য উহাদের নাম শুলদণ্ড । - এই স্তম্ভ দুইটি হইতে আরও কিছু (প্রায় এক মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে পিয়াসবাড়ী দীঘি অবস্থিত। সাধারণ লোক ইহাকে “পিয়াজবাড়ী” পুকুর বলিয়া থাকে। এই স্থানে উচ্চ ভূখণ্ডের উপর একটি ডাকবাংলা আছে। গৌড় দর্শনেচ্ছু যাত্রীরা ভাড়া দিয়া এই ডাকবাংলায় থাকিয়া ইহাকে কেন্দ্র করিয়া গৌড় দর্শন করিতে পারেন। পিয়াসবাড়ীতে সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি বিস্তীর্ণ রেশমের কারখানা আছে। আধুনিক হইলেও ইহা গৌড় যাত্রীর একটি দ্রষ্টব্য বস্তু। পূর্বে পিয়াসবাড়ীতে একটি প্রসিদ্ধ মাদ্রাসা ছিল । পিয়াসবাড়ী হইতে দক্ষিণদিকে যে রাস্তা গিয়াছে উহা দিয়া প্রায় আধ মাইল পথ গেলে রামকেলি গ্রামে উপস্থিত হওয়া যায়। এই গ্রামের প্রবেশ পথেই প্রসিদ্ধ রূপসনাতন-সেবিত মদনমোহনের ঠাকুরবাড়ী ও কেলি কদম্ব বৃক্ষ । মদনমোহন মন্দিরের ঠিক দক্ষিণে কেলি কদম্ব বৃক্ষ । একটি বেদীর মধ্যে চারিটি বৃক্ষ দেখিতে পাওয়া যায়, তন্মধ্যে দুইটি তমাল ও দুইটি কদম্ব । একটি তমাল বৃক্ষ অত্যন্ত বৃহৎ । গ্রীচৈতন্য রামকেলিতে আসিয়া ইহারই ছায়ায় বিশ্রামলাভ করিয়াছিলেন । বৃক্ষটির নিম্নে একখান নাতিবৃহৎ কৃষ্ণ প্রস্তরখণ্ড রক্ষিত আছে। উহার অঙ্গে স্ত্রীচৈতন্তের পদটি অঙ্কিত। স্ত্রীচৈতন্য জ্যৈষ্ঠ মাসের সংক্রান্তির দিন রামকেলিতে এই বৃক্ষমূলে বিশ্রাম গ্রহণ করিয়াছিলেন । র্তাহার পদচিহ্ল, মদনমোহন বিগ্রহ, রূপসনাতনের বাসাবাড়ী, রূপ গোস্বামী খনিত রূপসাগর দীঘি এবং জীব গোস্বামী দ্বারা খনিত শু্যামকুণ্ড, রাধাকুণ্ড, ললিতাকুও ও বিশাখাকুও নামক পুষ্করিণী আছে বলিয়া রামকেলি বৈষ্ণবের পরম পবিত্র তীর্থ। এই হেতু রামকেলির অপর নাম গুপ্ত বৃন্দাবন । এখানে জৈষ্ঠ মাসের