পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৩২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলাদেশ \ర్చి a মাল পত্র লইয়া দ্বিতলে বা ত্রিতলের ঘরে থাকিতেন এবং একতলে দোকান হইত। ইহা ছাড়া ফেীতি মসজিদ বা ফুট মসজিদ এবং ফকীর শাহ, গদার দরগাহে ফকিরের এবং একটি তোতা পাখীর কবর আছে ; এই পাখীটি নমাজ আবৃত্তি করিতে শিখিয়াছিল। এই দরগাহের বিপরীত দিকে দুধ পীরের কবর ; কবরের নিকট একটি গৰ্ত্তে জুধ ঢালিয়া লোকে পূজা দিয়া থাকে। পুরাতন মালদহের পূর্ব প্রান্তে ধৰ্ম্মকুণ্ড’ ও ‘দেবকুণ্ড নামক দুইটি জলাশয় পাল রাজগণের সময়ে খনিত হইয়াছিল বলিয়া প্রবাদ আছে। দেবকুণ্ডের এক মাইল উত্তরে বেহুল নদী নামে একটি ক্ষুদ্র জলধারা প্রবাহিত। প্রবাদ, বেহুল লখিন্দরের মৃতদেহ লইয়া ভেলায় ভাসিতে ভাসিতে কালিন্দী নদী দিয়া এই নদীতে উপনীত হইয়াছিলেন । এই হেতু উহার নাম বেহুলা ; ইহা নিমাসরাই স্টেশনের পূর্ব দিকে নিকটেই অবস্থিত। আদিনা-কলিকাতা হইতে ১১৪ মাইল। এই স্থানে নামিয়া মুসলমান যুগের বাংলার প্রথম স্বাধীন রাজধানী পাণ্ডুয়ায় যাইতে হয়। স্টেশন হইতে সুবিখ্যাত আদিনা মসজিদ প্রায় তিন মাইল দূর। ইংরেজ বাজার হইতে সরাসরি মোটরগাড়ী করিয়া নদী পার হইয়া, পুরাতন মালদহ হইয়া আদিনায় যাওয়া যায়। পুরাতন মালদহ হইতে দূরত্ব মাত্র ৬ মাইল। আদিনা স্টেশনে নামিয়া পদব্রজে বা গোরুরগাড়ীতে পাণ্ডুয়া দেখিয়া আসাই সুবিধা। পূৰ্ব্ব হইতে ব্যবস্থা করিতে পারিলে গোযান পাইতে কোনও অসুবিধা হয় না । - পাণ্ডুয়া–পাণ্ডুয়ার উত্তর সীমানা রায়দীঘি, পূর্ব সীমানা আদিনা মসজিদ ও তাহার এক মাইল পূর্ব পর্য্যন্ত স্থান, পশ্চিম সীমান মহানন্দা নদী এবং দক্ষিণ সীমানা শমসাবাদ । ইহা দৈর্যো প্রায় ষোল মাইল এবং প্রস্থে প্রায় আট মাইল । ইহা 'হজরৎ পাণ্ডুয়া’ নামেও অভিহিত হয়। গৌড় প্রসঙ্গে পাণ্ডুয়ার ও তাহার রাজাদের কথা বলা হইয়াছে । ইহা অতি প্রাচীন নগরী । কোন কোন ঐতিহাসিক বলেন যে ইহাই প্রাচীন কালের পৌণ্ডবৰ্দ্ধন। (বগুড়া স্টেশন দ্রষ্টব্য)। পুরাতন মালদহ হইতে দিনাজপুরের রাস্ত ধরিয়া ছয় মাইল চলিলে যেখানে রেলপথে আদিনা রেল স্টেশন অবস্থিত, ঐ স্থান হইতে বন জঙ্গল পওয়া যায়। এই স্থান হইতে ধ্বংসাবশিষ্ট পাণ্ডুয়া নগরের প্রান্ত প্রায় দুই মাইল দূর। প্রথমে পড়িবে পাণ্ডুয়ার বড় দরগাহ । এই দরগাহে পীর সৈয়দ মখদুম শাহ জলাল তব রিজীর সমাধি আছে। দরগাহে মুসলমান ফকিরদিগকে নিত্য ও আহাৰ্য্য পানীয় দানে সেবা করা হয়। এজন্য সম্পত্তির আয় নির্দিষ্ট আছে। ২২ হাজার বিঘা পীরোত্তর লইয়া এই সম্পত্তি বলিয়া দরগাহটি সাধারণতঃ বাইশ হাজার দরগাহ নামে পরিচিত। পুরাধামে যেমন শ্রীচৈতন্তের দন্তকাষ্ঠ হইতে প্রকাণ্ড বৃক্ষ জন্মিয়াছিল বলিয়া প্রবাদ আছে, এই দরগার প্রাঙ্গনেও তেমনই একটি নিম্ব বৃক্ষ দেখাইয়া বলা হয় যে, ফকির সাহেবের দস্তৃকাষ্ঠ হইতে উহা জন্মগ্রহণ করিয়াছে। রাভেনশ বলেন, ফকিরের দাক্ষিণাত্যে দেহান্তর হইয়াছিল এবং সেইস্থানে তাহার প্রকৃত কবর আছে, এইটি তাহার নকল। দরগাহের মধ্যস্থ জুম্মা মসজিদ সুলতান আলি মুবারক ১৩৪৫ খৃষ্টাব্দে নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন।