পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -প্রথম খণ্ড.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ববঙ্গ রেলপথে বাংলা দেশ 46. ভাটপাড়া হইতে দুই মাইল পূর্বে মাদরাল গ্রামে জয়চন্তী দেবীর একটি প্রাচীন মন্দির আছে। এখানে সপ্তম দোল উপলক্ষে মেলা ও বহু জন সমাগম হয়। জয়চণ্ডীর মুক্তি এক খানি প্রস্তর হইতে খেদাই করিয়া নিৰ্ম্মিত । নৈহাটি জংশন—কলিকাতা হইতে ২৪ মাইল দূর। ভাটপাড়ার ন্যায় নৈহাটিতেও অনেকগুলি কল হইয়াছে এবং জনসংখ্যা বহুপরিমাণে বাড়িয়া গিয়াছে। প্রসিদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক পরলোকগত মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় এই গ্রামের অধিবাসী ছিলেন । ভাটপাড়ার স্যায় নৈহাটি ও অনেক সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতের জন্মস্থান । নৈহাটি স্টেশনের ঠিক পূর্বদিকবৰ্ত্তী কাঠালপাড়া পল্লী সাহিত্য-সম্রাট বঙ্কিম ভলন, কাঠালপাড় বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মস্থান । এই স্থানকে বাংলার সাহিত্যিক-তীর্থ বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। বঙ্কিমচন্দ্রের পৈতৃক নিবাসের অধিকাংশ জমি রেলওয়ে ইয়ার্ডের অন্তর্গত হইয়াছে, কিন্তু তাহার বৈঠকখানা ও পৈতৃক দেবালয়গুলি অভগ্ন আছে। যে কক্ষটিতে বসিয়া বঙ্কিমচন্দ্র গ্রস্থাদি রচনা করিতেন তাহা এখনও আছে। বঙ্কিমচন্দ্রের কুলদেবতা ৬বিজয় রাধাবল্লভ জীউর রথযাত্রা উপলক্ষে কাঠালপাড়ায় বিশেষ সমারোহ হয় । বঙ্কিম ভবনের অন্দরে একটি পুষ্করিণী আছে। অনেকে বলেন যে “ চন্দ্রশেখর” উপন্যাসে বণিত ভীমা পুষ্করিণীর বর্ণনা এই পুকুরটি হইতেই গৃহীত । বঙ্কিমচন্দ্রের পুণ্যস্থতি রক্ষা কল্পে প্রতিবৎসর কাঠালপাড়ায় সাহিত্যসেবীদিগের একটি সম্মেলন হইয়া থাকে ; উহা “ বঙ্কিম সাহিত্য সম্মেলন” নামে পরিচিত। -