২২৬ বাংলার পাখী। ঘসাইয়া শিকারে বাহির হয়। তার পরে গাছে কোনো পাখীকে বসিয়া থাকিতে দেখিলেই, শিকুরাকে সেই দিকে । ছাড়িয়া দেয়। শিক্রা ছুটিয়া সেই, পাখীকে ধরিয়া আনে। আগেকার রাজা-রাজড়া ও বাদশারা এই রকমেই শিকুরা, ও বাজপাখী দিয়া অন্য পাখী শিকার করিতেন। শিকরা পাখীরা গাছের খুব উঁচু ডালে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে বাসা বঁধে। শালিক, চড়াই প্ৰভৃতি পাখীরা বাসা রাখার সময় যে কত ব্যস্ত থাকে, তাহা তোমরা সকলেই দেখিরাহু । তখন তাহদের খড়কুটা জোগাড় করিতে আহার-নিদ্রা বন্ধ হইয়া যায়। কিন্তু শিকুরা পাখীদের বাসা বঁধার জন্য সেরকম তাগিদ দেখা যায় না। দিনে দুটা বা চারিটা খড় যদি গাছেয় উপরে আনিয়া রাখিতে পারে, যথেষ্ট। এই রকমে এক মাসে তাহাদের বাসা তৈয়ারি হয়। কিন্তু বাসার শ্ৰীছাদ একটুও দেখা যায় না ; এলোমেলো করিয়া সাজানো কতকগুলা খড়কুটাই শিক্রাদের বাসা। এই রকম বাসায় তাহারা দুই তিনটি করিয়া ফুটফুটে সাদা রঙের ডিম পাড়ে। পুরাণের গল্পে শুনিরছি, গরুড় জম্মিয়াই “খাই—খাই” করিয়া খাবারের সন্ধানে উড়িতে আরম্ভ করিয়াছিল। তাহাকে বড় বড় বীরেরাও ধরিয়া রাখিতে পারিত না। শিকুরার বাচ্চাদের গরুড়েরই মতো সাহস দেখা যায়। তাহারা নিঃসহায়ভাবে বাসায় থাকে না। অন্য পাখীরা বাসার কাছে আসিলে ঐ ছোটো বয়সেই তাহারা শক্ৰদের আক্রমণ করে।
পাতা:বাংলার পাখি - জগদানন্দ রায়.djvu/১৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।