পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NOV বাংলার পুরনারী “কিন্তু কাজল, তোমার আরও অনেক কষ্ট আছে,-তুমি কষ্ট সহিয়া থাকিও এবং যে পৰ্য্যন্ত ধৰ্ম্ম-মতি শুক তোমার পরিচয় না দেন, সে পৰ্য্যন্ত তোমার পরিচয় নিজে দিতে যাইও না। জানিও কপালের দুঃখ জোর করিয়া কেহ খণ্ডাইতে পারে না।” এই বলিয়া সন্ন্যাসী চলিয়া গেলেন। কাজল শয্যা-পাশ্বে বসিয়া একটি একটি করিয়া সেই সূচিগুলি খুলিতে লাগিলেন, ইতিপূর্বে তিনি তিন দিনের উপবাসী ছিলেন। এখন আরও সাত দিন সাত রাত্ৰি উপবাসী থাকিয়া তিনি সর্বাঙ্গের সূচি খুলিয়া ফেলিলেন। তারপর শুদ্ধ-স্নাতী হইয়া চােখের সূচি দুটি খুলিয়া স্বামীকে দেখা দিবেন, এই ইচ্ছা করিয়া নিকটবৰ্ত্তী এক সরোবরে স্নান করিতে (८८65 ।। পুকুরের জলের রং ডালিমের মত এবং উহার চারদিকেই বাধা ঘাট আছে । পূর্ব ঘাটে বসিয়া তিনি গাত্র মার্জনা করিয়া স্নান করিলেন, প্ৰভাতের কিরণে তাহার রূপ ঝলমল করিয়া উঠিল। এমন সময় একটি বৃদ্ধ-চীৎকার করিয়া যাইতেছিল, “দাসী নেবে গো ।” বুদ্ধের পলিত কেশ, সামান্য একটা কাটিবাস, না খাইয়া শরীর বিশীর্ণ, তঁহার সঙ্গে একটি মেয়ে,-সাধাসিধা চাষার ঘরের মেয়ে, পরণে একখানা ময়লা শাড়ী । বৃদ্ধ কাজলের কাছে আসিয়া বলিল, “আমি অতি গরীর, আমার দিন অনেক সময়ই উপবাসে যায়। গ্ৰহবৈগুণ্যে কন্যাটিকে বিক্রয় করিতে উদ্যত হইয়াছি, তাহা না হইলে নিজেই বা কি খাইব ইহাকেই বা কি খাওয়াইব ? এই জনহীন জঙ্গলাদেশে কেহ ইহাকে কিনিতে চাহিল না-এ জায়গা জনমানবহীন । কিন্তু এক সন্ন্যাসী এই পুকুরের ঘাট দেখাইয়া বলিল, “ঐ ঘাটে একজন রাজকুমারী স্নান করি।- তেছেন, তিনি হয়ত তোমার কন্যাকে কিনিতে পারেন ।” কাজল ভাবিলেন, আমি এক দুর্ভাগা কন্যা, কৰ্ম্মদোষে আমার বাবা আমাকে বনবাস দিয়াছেন ; এই কন্যাও আমারই মত জন্মদুঃখিনী, তাহার বাবা পেটের দায়ে ইহাকে বিক্রয় করিতে আসিয়াছে। কাজলের প্রাণ