পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(8 বাংলার পুরনারী সভায় স্বর্ণশিলকা বিশিষ্ট পিঞ্জরে শুক পাখীটা আনীত হইল। শুক সভ্যাদিগকে প্ৰণাম করিয়া নিবেদন করিলেন “ভাটিয়াল দেশে ধনেশ্বর নামক বণিকরাজ বাস করিতেন। তিনি কুবেরের মত ধনশালী ছিলেন, তাহার একটি পুত্র ও একটি কন্যা। যখন কন্যাটির বয়স ১১ এবং ছেলের বয়স মাত্র চার ; তখন জুয়া খেলিয়া তিনি সর্বস্ব হারা হইলেন। কোন সন্ন্যাসী তাহাকে একটি শ্ৰী আংটী ও ধৰ্ম্মমতি নামক একটি শুক পক্ষী দিয়া বলিলেন, পাখীটির উপদেশ মত যদি তুমি চল, তবে তোমার ইষ্ট হইবে। শ্ৰী আংটিটি বিক্রয় করিয়া সাধু অনেক ধন পাইলেন, তাহার দ্বারা তাহার বিশালপুরী মেরামত করিয়া উদ্ধত অর্থ লইয়া বাণিজ্যে গেলেন । এইবার তাহার ভাগ্য ফিরিল। তিনি বাণিজ্য করিয়া এত লাভবান হইলেন যে তাহার পুরী ধনধান্য ও সমৃদ্ধিশালী হইয়া পূর্ববৎ হইল। কিন্তু তাহার মেয়ে তখন দ্বাদশবর্ষে পড়িাছে। জুয়া খেলার জন্য র্তাহার দুনাম হইয়াছিল ; জুয়ারীর কন্যাকে কেহ বিবাহ করিতে রাজী হইলেন না । আমার কাছে সদাগর পরামর্শ চাহিলেন আমি বলিলাম, এই কন্যা অতি দুৰ্ভাগা, তুমি আজই ইহাকে বনবাসে দিয়া আস—যদি সন্তান স্নেহে তুমি তাহা না পারি, তবে কন্যা ও তুমি ঘোর বিপদে পড়িবে। একটি ভাঙ্গা মন্দিরে একটী মৃত রাজকুমার আছেন, কন্যার অদৃষ্ট সেই মৃত কুমারই ইহার স্বামী হইবে। কঁাদিয়া কাটিয়া ধনেশ্বর সে ভাটী অঞ্চলের নিবিড় অরণ্যে কন্যাকে সেই মৃত রাজকুমারের নিকট ফেলিয়া আসিলেন। তিন দিন তিন রাত্ৰি কন্যা কিছু খান নাই। এক সন্ন্যাসীর উপদেশ সাত দিন সাত রাত্রি জাগিয়া কন্যা একটি একটি করিয়া রাজকুমারের সর্বাঙ্গের শল্য উদ্ধার করিলেন, কিন্তু সন্ন্যাসীর উপদেশে চক্ষের দুটি সূচি তিনি তখনও উঠান নাই। সর্বশেষে সন্ন্যাসী দত্ত পাতার রস চােখে দিয়া সেই সুচ দুটি তুলিতে হইবে, এই ছিল সন্ন্যাসীর নির্দেশ। কাজলরেখা পুকুর ঘাটে স্নান করিয়া শুদ্ধ শান্ত ভাবে স্বামীর চক্ষের সূচি তুলিবেন, এইজন্য সেই ঘাটে বসিয়া অঙ্গ মার্জনা