পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলার পুরনারী ܓܟܠ পড়িয়া বনের মাটীতে মিলাইয়া যায়, কেহ তাহাদিগকে দেখে না । কিন্তু যে পবিত্ৰ ভূমিতে তাঁহাদের জন্ম তাহার কাছে তাহাদের প্রতিটি রেণুর ফৰ্দ আছে ; সেই ভূমি নানা বর্ণের—নানা গন্ধের রেণু কুড়াইয়া রাখেন, এবং পরে যে সকল ফুল ফোটে তাহা ভূমি হইতে সেই বিগত বৈভবের রেণু লইয়া পুষ্ট হয়। আমাদের ধরিত্রীর ভাণ্ডারে তাহা হারায় না। পুনঃ পুনঃ তাহা কলেবর পরিবর্তন করিয়া নূতন রূপ ধরিয়া পৃথিবীকে লাবণ্যময় করিয়া তোলে । কাজল রেখার মত কত রমণী এইদেশে রহিয়াছেন, সন্ন্যাসিনীর মত সাধুত্ব লইয়া ত্যাগ ও আত্মদানের চূড়ান্ত নিদর্শন দেখাইয়া চলিয়া গিয়াছেন। কেহ হয়ত তাহদের মহিমা বুঝে নাই। বিরুদ্ধ বেষ্টনীর মধ্যে তঁহাদের লোকাতীত সৌন্দৰ্য্যের ও সরস প্ৰাণের রস-বোদ্ধা কেহ ছিল না ; অকথ্য কষ্ট সহিতে সহিতে র্তাহারা চলিয়া গিয়াছেন ; কিন্তু এ দেশের বাতাসে এখনও তাঁহাদের সুরভি আছে এবং অনুকূল গ্রহের বিধানে হয়ত আমাদের রমণী-সমাজে আবার সেইরূপ শাখা সিন্দুরের অভিমান ফিরিবে,-হয়ত সেই গেরুয়ার নিম্পূহত ও সংযমের কষায় বাস আবার জীবন্ত হইয়া দেখা দিবে, তখন বৌদ্ধসজেঘর পবিত্ৰ বহির্বাস হিন্দু ও অন্তঃপুরের পট্টবাসের মহিমা-আবার উজ্জল হইয়া এই দেশে প্ৰতিষ্ঠা পাইবে। এদেশে কোনকালেই তাহার অধ্যাত্ম সম্পদ বিচ্যুত হয় নাই। যাহারা চিতায় পুড়িয়া প্রেমের অকুতোভয়তা এবং একনিষ্ঠা দেখাইয়াছেন-যাহারা গাৰ্হস্থ্য ধৰ্ম্মপালন করিতে যাইয়া ব্ৰহ্মচারিণীদের অপেক্ষাও একব্রত হইয়াছিলেন, সেই সকল অঙ্গনা চলিয়া গিয়াছেন, প্ৰতিষ্ঠা তাহারা চান নাই-এজন্য পান নাই, কিন্তু প্ৰকৃতি র্তাহার আঁচলে সেই সকল চিন্তা-ভস্ম রাখিয়া দিয়াছেন। আবার দেশের ভাগ্য ফিরিলে সেই রিক্তাদের মহাবৈভব লোকচক্ষুর গোচর হইবে এবং ভারতবর্ষ অধ্যাত্মসম্পদের অধিকারী হইবে। এই গল্পের সামাজিক অবস্থা যাহা পরিকল্পিত হইয়াছে, তাহাতে বঙ্গ দেশের পাল-যুগের বিপুল ঐশ্বৰ্য্যের কথা আছে, সেই সময়কার অপরাপর অনেক গল্পেই তাহ পাওয়া যায়। হয়ত অনেক অতিরঞ্জন আছে, কিন্তু