পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

DRYF KEJU V0 ত্রিশটি ঘোড়া তাহার বাড়ীতে সর্বদা ব্যবহারের জন্য ছিল এবং গো-শাসনে শত শত মহিষ, ভেড়া ও দুগ্ধবতী গাভী বিচরণ করিত। র্তাহার। চল্লিশ ‘কুড়া' খামারের জমি ও বিস্তর সরু শস্যের গোলা ছিল। অতিথি ও বৈষ্ণব আসিলে সে গৃহে কতই না আদর অভ্যর্থনা পাইত এবং আশাতীত দানে আপ্যায়িত হইত। ব্ৰাহ্মণ আসিলে নববস্ত্র ও দক্ষিণ পাইয়া গৃহস্বামীকে আশীৰ্ব্বাদ করিয়া যাইতেন এবং খঞ্জ, কাণা ও অন্যান্য ভিখারীরা কাঠা ভরিয়া চাউল ভিক্ষা পাইত । ধনে-ধান্যে লক্ষ্মীমন্ত মাণিক চাকলাদার দয়া দাক্ষিণ্য ও সুবিচার দ্বারা সে অঞ্চলে সুনাম অর্জন করিয়াছিলেন ; তঁাহার একটি কিশোরী কন্যা ছিল, নাম তার কমলাযেন পদ্মাসনা পদ্ম ছাড়িয়া ভূতলে আবিভূতি হইয়াছিলেন, এমনই তাহার রূপ। তাহার কালো চোখ দুটি নীলাব্জ বা অপরাজিতার মত সুন্দর ছিল এবং দীর্ঘ কেশগুলি কালো মেঘের লহরীর মত উড়িতে থাকিত, সেই কেশে “কখন খোপা বঁধে কন্যা, কখন বঁধে বেণী”-যৌবনাগমে এই কুমারীর রূপ শত গুণ বাড়িয়া জোয়ারের নদীর মত পূর্ণতা লাভ করিল। রাজাদের নীচে কয়েকজন চাকলাদার বা জমিদার থাকিতেন- এই পদের নীচে রাজস্ব আদায় উসুল করার জন্য রাজারা ‘কারকুণ’ নামক একশ্রেণীর কৰ্ম্মচারী নিযুক্ত করিতেন। মানিক চাকলাদারের অধীনে একজন তরুণ বয়স্ক কারকুণ ছিল। জমিদারী সেরেস্তার সমস্ত দলিল ও কাগজপত্ৰ তাহার হেপাজতে থাকিত এবং চাকলাদারের হিসাব-পত্র এই কারকুণাই রাখিত । একদিন বৈকাল বেলা গ্রীষ্মের উত্তাপে কমলা স্নান করিতে নিকটবৰ্ত্তীর্ণ দীঘির ঘাটে গিয়াছে।. একটি দারুক গাছের আড়ালে কারকুণ তাহাকে দেখিতে পাইয়া মুগ্ধ হইল। সে কমলাকে লাভ করিবার জন্য একবারে উন্মত্ত হইয়া সেই গ্রামের চিকন গোয়ালিনী নামক এক দুশ্চরিত্রা রমণীর শরণাপন্ন হইল। এই নারী প্ৰায় বাৰ্দ্ধক্যে উপনীত হইয়াছিল। সে দুধ বেচিয়া জীবিকা নির্বাহ কারিত কিন্তু যৌবন কালে দুধ অপেক্ষা কথা বেচিয়াই সে অধিক সংখ্যক গ্ৰাহক সংগ্ৰহ করিত। “, • • • • •এই চিকন গোয়ালিনী। এক সের দৈয়ে দিত তিন সেরা পানি।” N