পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vy বাংলার পুরনারী এখন আর তাহার রূপের বাহার নাই “যদিও যৌবন গেছে, তবু আছে বেশ । বয়সের দোষে মাথার পাকিয়াছে কেশ । কোন দন্ত পড়িয়াছে, কোন দন্তে পোকা । সোয়ামী মরিয়া গেছে। তবু হাতে শাখা ।” VN যৌবন চলিয়া গেলে এই শ্রেণীর রমণীরা মন্ত্র তন্ত্র ও টোনা প্ৰভৃতি শিখাইয়া দুশ্চরিত্র যুবকদিগের কু-অভিপ্ৰায় সিদ্ধ করিতে সহায়তা করিয়া থাকে। চিকন গোয়ালিনীও সেইরূপ অনেক ‘টোন’ জানিত, তাহার পানপড়া একরূপ অব্যৰ্থ ছিল— সে তাহা দিয়া যুবক যুবতীদের অসৎ অভিপ্ৰায় পূর্ণ করিতে সাহায্য করিত। “আর একটা ঔষধ শুনি আছে তার কাছে । গৃধিনীর কান আর কালপনা মাছে৷ কিছু কিছু পেচার মাংস বাটিয়া গুটিয়া । তিল পরিমাণ বাড়ী করে শুকাইয়া । এক এক বড়ীর দাম পাঁচ বুড়ি কড়ি। এরে খাইলে পাগল হয় পাড়ার যত নারী ॥” কারকুণ কমলাকে বশীভূত করিবার উপায়ের জন্য এই দুশ্চরিত্রা গোয়ালিনীর বাড়ীতে গেল । কেওয়া খয়ের ও সুগন্ধি সুপুরিযুক্ত পানের খিলি দিয়া চিকন কারকুণের অভ্যর্থনা করিল ; সে অঞ্চলের খাজনা তহসিলের ভার যে কৰ্ম্মচারীর উপর, তিনি স্বয়ং তাহার বাড়ীতে আসিয়াছেন এই গৌরবে উৎফুল্ল হইয়া চিকন গোয়ালিনী তাহার হাতে একটা গুড়গুড়ির নল দিতে দিতে জিজ্ঞাসা করিল, এত বড় সৌভাগ্য তাহার কিসে হইল যে স্বয়ং কারকুণ তাহার কুঁড়ে ঘরে পায়ের ধূলো দিয়াছেন। কারকুণ অতি গোপনে তাহাকে তাহার অভিপ্ৰায় জানাইল। গোয়ালিনী এই কথা শোনা মাত্ৰ দাতে জিভ কাটিয়া তাহার অক্ষমতা জানাইল, “তিনি তোমার উপরিওয়ালা, একথা জানিলে তিনি তোমার গর্দান লইবেন। আর আমি চাকলাদারের বাড়ীতে দুধ ও দৈ বেচিয়া কায়ক্লেশে দিন গুজরাণ করি