পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

lo/o বাংলার পুরনারী সিন্দূরে, কিষণ ভোগ প্ৰভৃতি ৪০০ শত আমগাছ, অতি বৃহৎ গোলাপজাম, লিচু, কালোজাম, কঁাটাল, নারিকেল, এমন কি কমলা লেবু প্ৰভৃতি বৃক্ষমণ্ডলীতে সুসজ্জিত হইয়া বাগান-বাটটি প্ৰকৃতির একটি প্ৰিয় ছবির মত শোভা পাইত। সন্ধ্যাকালে নীল, লাল, কালো প্ৰভৃতি বিবিধ বর্ণের শত শত পক্ষী দূর-দূরান্তর হইতে কলরব করিতে করিতে আসিয়া বঁাক বঁাধিয়া সেই বাগানের ডালে বসিত এবং প্ৰহরে প্রহরে মিষ্ট কোলাহল করিয়া সুপ্ত ও অৰ্দ্ধ-জাগ্ৰত গৃহবাসীদের কর্ণে সুধা ঢালিয়া দিত। এই বাড়ী রঘুনাথ সেনের আদরের জিনিষ ছিল। এমন কোন ফুল-ফলের বৃক্ষ ছিল না, যাহা তিনি দূর দূরান্তর হইতে আনিয়া সেই বাগান অলঙ্কত করেন নাই। 'ড়াঃ চন্দ্ৰশেখর কালী লিখিয়াছেন :- “ঈশ্বর বাবু অনেকদিন সপরিবারে ধামরাই রামগতি কৰ্ম্মকারের বাড়ীতে বাসা করিয়াছিলেন। একবার তাহার সুয়াপুরের বাড়ীর বাগানের লিচুফল আমাদিগকে খাইতে দিলেন। ইতঃপূর্বে আমরা কখনও লিচুফল দেখি নাই। আমাদের গ্রামে। তখনও লিচুফলের গাছ ছিল না ।” ১৯১৯ সনের ঝড়ে এই সুদৃশ্য বাগানের ১০৷১২ বিঘা ব্যাপক ফলের বৃক্ষগুলি উড়াইয়া লইয়া গিয়া যেন রাজ-রাণীকে কাঙ্গালিনীর নিরাভরণ বেশে পরিণত করিয়াছে। কোথায় গেল সে সবুজ রঙ্গের সমারোহ এবং দীর্ঘাকৃতি শিখপ্রহরীর মত উন্নত দেবদারুর পংক্তি ! ফলগাছগুলির সমস্তই ঝড়ে গ্ৰাস করিয়াছে। ১৮৮৬ সনে দীনেশচন্দ্রের শান্ত পরিবারবর্গের উপর যেন আকস্মিক বজ্ৰাঘাত হইল। ঐ সনের ভাদ্র মাসে ঈশ্বরচন্দ্র এবং পাঁচ মাস পরে শীত ঋতুতে র্তাহার সহধৰ্ম্মিণী এবং পর পর কয়েকটি প্ৰাপ্তবয়স্ক কন্যা পরলোক গমন করেন। অকস্মাৎ যেন ‘কুসুমিত নাট্যশালা সম’ পুরীর সমস্ত আনন্দ কলরব থামিয়া গেল এবং তাহা শ্মশানের মত স্তব্ধ ও জনবিরল হইয়া পড়িল । দীনেশ বাবু এই সময় ঢাকা কলেজে বি এ ক্লাসে পড়িতেছিলেন। তিনি ইংরেজী সাহিত্যের অনুরাগী ছিলেন এবং পাঠ্য পুস্তক ত্যাগ করিয়া অপাঠ্য পুস্তকের প্রতি বেশী মনােযোগী হইয়াছিলেন। বাড়ীতে র্তাহার বিধবা