পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o বাংলার পুরনারী নাই, এবং যেদিন সেই বিখ্যাত কবি পরলোক গমন করেন, সেই সংবাদ তার যোগে ভারতবর্ষে আসিয়া পৌছিলে সমস্ত দিনটা তিনি উপবাস করিয়াছিলেন । ঢাকা কলেজের চতুর্থ বার্ষিক শ্রেণীতে উঠিয়া তিনি বাত রোগে শয্যাশায়ী হইয়াছিলেন । সে বৎসর আর পরীক্ষা দেওয়া হইল না । ইহার দুই বৎসর পরে ১৮৮৯ সনে তিনি শ্ৰীহট্ট জেলার হবিগঞ্জ স্কুলে মাষ্টারী করিয়া বি, এ পরীক্ষা দেন। পাঠ্য-পুস্তকের সঙ্গে তঁহার কোন কালেই সম্বন্ধ ছিল না । এবারও বি, এর কতকগুলি বই যথা আলোির “ফাইললজি, তিনি একেবারে স্পর্শ করেন নাই, তথাপি বি, এ পরীক্ষায় ইংরেজীতে অনার্স সহ উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন। এই সময় তিনি ইংরেজী সাহিত্য, ফরাসী, জাৰ্ম্মান ও রাসিয়ান সাহিত্যের ইংরাজী অনুবাদগুলি খুব মনোযোগের সহিত পাঠ করিতেন। ভিকটর হিওগোর লে মিজারেবল, হাঞ্চ ব্যাক অফ নটার ডেম, বাই কিংস কমাণ্ড, ইউজন সু-র ওয়াণ্ডারিং জু, গেটের ফষ্ট প্ৰভৃতি গ্রন্থের চরিত্র বিশ্লেষণ দ্বারা তিনি সতীর্থবৰ্গকে বিশেষরূপে আকৃষ্ট করিয়াছিলেন । কিন্তু তাহার পাণ্ডিত্য ও শিক্ষার আর একটা দিক ছিল, যে বিষয়ে সেই কালে তাহার সহকৰ্ম্মীদের মধ্যে আর কেহই তাহার সমকক্ষতা করিতে পারিতেন না । আমরা পূর্বেই লিখিয়াছি, তাহার জ্যেষ্ঠ ভগিনী দিগবসনী দেবীর কৃপায় তিনি আশৈশব বাংলা প্ৰাচীন সাহিত্যে ঘনিষ্টভাবে প্ৰবেশ লাভ করিয়াছিলেন। দিদির মুখে পদাবলীর আবৃত্তি শুনিয়া তিনি তন্ময় হইয়া যাইতেন । বাংলা রামায়ণ, মহাভারত, কবিকঙ্কণের চণ্ডীর অনেকাংশ এবং চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস এবং গোবিন্দদাসের অনেক পদ তিনি সাত বৎসর বয়সে মুখে মুখে আবৃত্তি করিতে পারিতেন। ১৮৭৮ কিংবা ইহার নিকটবৰ্ত্তী কোন সময়ে ঢাকা মত্তগ্রামবাসী সুপণ্ডিত উমাচরণ দাস মহাশয়ের সাহায্যে কুমিল্লা গবৰ্ণমেণ্ট হাই স্কুলের হেড মাষ্টার জগদ্বন্ধু ভদ্র মহাশয় বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাসের পদাবলীর একটি সংস্করণ প্ৰকাশিত করেন। বৈষ্ণব বাবাজীর বুলি হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া এই দুই অমর কবি এই সূত্রে সর্বপ্রথম বঙ্গীয়