পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চন্দ্ৰাবতী SNSDA এই গল্পের বিশেষ একটা দিক এই যে ইহাতে বাস্তব ও অবাস্তবের মিলন দৃষ্ট হয়। তপস্যা, সংযম প্রভৃতি অধ্যাত্ম জীবনের তত্ত্ব ইহার উপর প্ৰভাব বিস্তার করিয়াছে,-তাহা সূত্রাকারে নহে, সহজ সরল সত্য পরিষ্কার কবিত্বের ভাষায় কথিত হইয়াছে—তাহাতে জ্ঞানী বা দার্শনিকের শুষ্কতা বা জটিলতা নাই।-গল্পের ছন্দে বা বর্ণনায় তাহা বেখাপ্পা হয় নাই। অথচ প্রেমের গভীরতায়, উপলব্ধির গাঢ়তায়, অবস্থার বৈগুণ্যে, আত্মদানের মহিমায়-এই নায়িকা শ্রেষ্ঠ কাব্য-বর্ণিত প্রেমিকদের এক পংক্তিতে সমাসীন। যেমন উন্মত্ত উচ্ছসিত সেই প্রেমের প্লাবন, তেমনই কঠোর শক্ত সেই সংযমের বঁাধ-আত্মহারার আত্মদান ও তপস্বীর সাধনা একত্র এই মহান দৃশ্যপটে দেখা যাইতেছে। পদ্মার ভাঙ্গন পারে দাড়াইলে যে বিস্ময়কর দৃশ্য চক্ষে পড়ে—ইহা তাঁহাই। ঘনঘটা করিয়া উন্মত্ত তরঙ্গ অবাধ শক্তিতে ছুটিয়াছে, আকাশ বক্ষ প্রসারিত করিয়া সেই তরঙ্গকে বাধা দিতেছে। পৃথিবী ও স্বৰ্গ দিথলয়ে পরস্পরকে ছুইয়া আছে, যেন প্ৰেম বড় কি সংযম বড় এই সমস্যার সৃষ্টি করিবার জন্য । চন্দ্রাবতী তাহার পিতা বংশীদাসের সঙ্গে একযোগে মনসা দেবীর মঙ্গলকাব্য রচনা করেন। তঁহার মাতার নাম অঞ্জনা, ফুলেশ্বরী নদীর তীরে ইহারা খড়ের কুটিরে বাস করিতেন। ১৫৭৫ শকাব্দায় “মনসার ভাসান’ রচিত হয়, তন্মধ্যে কেনারামের পালাটি সম্পূর্ণ ইহার রচনা। কবিত্বে ও করুণ রসে সেই কাহিনীটির জোড়া পাওয়া দুর্ঘট।। চন্দ্রাবতীর দ্বিতীয় কাব্য মলুয়া-পল্লীগীতিকার শিরোমণি ; পূর্বেই লিখিয়াছি, চন্দ্রাবতী পিতার আদেশে যে রামায়ণ রচনা করিয়াছিলেন, তাহা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আংশিকভাবে প্ৰকাশ করিয়াছেন। আমরা প্ৰাচীন বাংলা সাহিত্যে যে সকল মহিলা-কবির রচনা পাইয়াছি, তাহদের মধ্যে চন্দ্রাবতীর অবিসংবাদিত ভাবে সর্বোচ্চ আসন । ১৫৭৫ শকে অর্থাৎ ১৬৬৩ খৃঃ অব্দে চন্দ্ৰা পিতার সহযোগে মনসামঙ্গল রচনা করিয়াছিলেন, তাহা বলা হইয়াছে। তখন র্তাহার বয়ক্রম ২৫ বৎসর ধরিয়া লইলে তিনি সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, বলা যাইতে পারে। চন্দ্রাবতীর জীবনের অনেক কথা তিনি নিজেই লিখিয়া গিয়াছেন, তন্মধ্যে জয়চন্দ্ৰ-ঘটিত প্ৰেম-কাহিনীটি Šbr