পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন-কথা Mo শিক্ষিত সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জগদ্বন্ধু ভদ্র মহাশয় মেঘনাদ-বধ কাব্যের ব্যঙ্গ-কাব্য “ছুছন্দরী বধ কাব্য’ প্ৰণয়ন করিয়া সেই সময়ে যশস্বী হইয়াছিলেন। উত্তরকালে ‘গৌরপদ "তরঙ্গিনী’ সঙ্কলন করিয়া ইনি বৈষ্ণব সমাজে বিশেষরূপে পরিচিত হন। দীনেশবাবু তখন হবিগঞ্জ স্কুলে শিক্ষকতা করিতেন। কিন্তু ইংরেজী ভাষার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেই সময়েই বিদ্যাপতি-চণ্ডীদাসের পদমাধুৰ্য্যের রসাস্বাদন করিতে কখনই বিরত হন নাই । “কি মোহিনী জান বঁধু কি মোহিনী জানি।” “কাহারে কহিব মনেরই মরম কেবা যাবে পর্যতীত”, “এ কথা কহিবে সই। এ কথা কহিবে।” “যথা তথা যাই আমি যতদূর যাই। চাদ মুখের মধুর হাসে তিলেকে জুড়াই।” “পিয়া যাব আওব এ মাকু গেহে, মঙ্গল আচার করব। নিজ দেহে ।” প্ৰভৃতি পদ ব্ৰাহ্মণের গায়িত্রীর মত তিনি ত্রিসন্ধ্যা জপ করিতেন। সে সময়ে ব্ৰহ্ম-সঙ্গীত শিক্ষিতদের কণ্ঠে কণ্ঠে ঝঙ্কত হইত এবং তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় লম্পট শঠ বংশীধারীর কুৎসা প্ৰতিনিয়ত প্ৰচারিত হইত। তখনও এ সকল পদের রস-বোদ্ধা শিক্ষিত সমাজে একরূপ ছিল না বলিলে অত্যুক্তি হয় না। দীনেশবাবু নিজের মনে মনে এই সকল গীতি গুণ গুণ করিয়া আবৃত্তি করিতেন এবং তাহাতেই পরিতৃপ্ত হইতেন। পাখী যেরূপ কাহাকেও শুনাইবার জন্য গান করে না, তাহার মিষ্ট-স্বরের পুলকে স্বয়ং পুলকিত হয়, কোন দরদী শ্রোতার প্রতীক্ষা করে না—দীনেশবাবুর পক্ষে বাংলা প্ৰাচীন সাহিত্যের সাধনা ছিল সেইরূপ গৃঢ় সাধনা অপরের অগোচরে। ইহা যে কোন কালে কোন কাজে লাগিবে-তােহা তিনি ভাবেন নাই। বি, এ পাশ করার পর তিনি শম্ভুনাথ ইনস্টটিউসনের প্রধান শিক্ষক হইয়া কুমিল্লা চলিয়া আসেন। এই সময়ে কবি নবীনচন্দ্ৰ সেন ছিলেন e