পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SQV বাংলার পুরনারী ইহাতে রাজ-বাড়ীর কেহ, নৌকার মাঝি, এমন কি রাজা পৰ্য্যন্ত এই গোপনীয় বিবাহ সম্বন্ধে কেহই কিছু জানিতে পারিলেন না। রাজা পরদিন জাগিয়া শুনিলেন, কন্যাটি রাজপুরী হইতে পলাইয়া গিয়াছে এবং মদনকেও পাওয়া যাইতেছে না। সকলের নিকটই বিষয়টি স্বাভাবিক বোধ হইল । মুসলমানের হাতে যাইয়া পড়ার অপেক্ষা এইরূপ পলায়ন করিয়া আত্মরক্ষা করা রাজকুমারীর পক্ষে অস্বাভাবিক নহে, সকলেই এই কথা ভাবিল। পরদিন যখন রাজার আদেশে ঢেরি পিটাইয়া প্রচার করা হইল যে দুষ্ট ভূত্য তাহার জাতি কুলে কলঙ্ক দিয়া রাজকুমারীকে লইয়া পলাইয়াছে, তাহাকে ধরাইয়া দিলে রাজা পুরস্কার দিবেন এবং অপরাধী ভূত্যকে কালীর নিকট বলি দিবেন, তখন এই রাজ-রোষ স্বতঃই হইয়াছিল, কারণ প্ৰকৃত ঘটনা রাজা কিছুই জানিতেন না এবং এ সংবাদ শুনিয়া মুর্শিদাবাদের নবাবও রাজার প্রতি বরং সহানুভূতি-পরায়ণ হইয়াছিলেন । রাণী কর্তৃক রাজকুমারীকে দানের কথা অবশ্য রাজা পরে শুনিয়াছিলেন। খড়ের আগুন যেমন দাউ দাউ করিয়া জ্বলিয়া উঠে এবং তাহা নিবিয়া যাইতেও গৌণ হয় না, নবাবদিগের লালসায় বাধা পড়িলে যেমন সহসা র্তাহারা ক্রুদ্ধ হন, কতকটা সময় অতীত হইলে সে ক্ৰোধ আর বেশী থাকে না । সুতরাং তারপরে মদনকে এজন্য আর কোন লাঞ্ছনা সহ্যু করিতে হয় নাই। এই গল্পটির আদ্যন্ত একটী কান্নার সুর আছে ; নবাবের আদেশ পাওয়ার পর হইতে রাজা ও রাণীর দুঃসহ মনোবেদনা ও দুশ্চিন্তার কথা বেশ আন্তরিকতা ও দরদ দিয়া রচিত হইয়াছে। গল্পটি আদ্যন্ত কৌতুহলউদ্দীপক । চরিত্র হিসাবে রূপবতীর চিত্রটি কোন অসামান্য বৈশিষ্ট্য বা গুণপনার পরিচায়ক না হইলেও উহা একটি নিখত ছবি। কোন কোন ছোট ফুল এরূপ দেখা যায়, যাহার সুরভি দূরের বাতাস পৰ্যন্ত পৌঁছায় না ; কিন্তু কাছে আনিলে বুঝা যায় ফুলটি সুস্রাণে ভরপুর। রূপবতী যে সকল অবস্থায় শঙ্কটের ভিতর দিয়া দ্রুত চলিয়াছেন, তাহার কোনটিতেই ভঁাহার