পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

toyo বাংলার পুরনারী শ্ৰোতা জুটিয়া গেল। দীনেশ বাবু যখন প্ৰাচীন সাহিত্যের গুণ বিশ্লেষণ করিয়া বঙ্গীয় প্ৰাচীন কবিদিগের কাব্য-প্ৰতিভার পরিচয় দিতেন, তখন কুমিল্লার শিক্ষিতমণ্ডলী মুগ্ধ হইয়া যাইতেন, তঁহাদের মুদিখানার পাঠ্য কাব্যগুলিতে যে এরূপ অপূর্ব রসের সন্ধান পাওয়া যায়-তােহা র্তাহারা জানিতেন না। দীনেশ বাবুর গদগদ কণ্ঠে আবৃত্তি, বৈষ্ণবপদের মহিমা-প্রচার এবং চৈতন্যদেবের জীবনকাহিনী শুনিয়া শ্রোতৃবৰ্গ তাঁহাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়াছেন। ঢাকায় একবার ছুটির সময় যাইয়া তিনি “পদাবলীর আলোকে চৈতন্য” এই বিষয়ে অল্প সংখ্যক সুধী-মণ্ডলীর নিকট এক বক্তৃতা করেন।--তখন এক বৃদ্ধ বসাক মহাশয় উচ্চৈঃস্বরে কঁাদিতে কঁাদিতে আসিয়া তঁহার পায়ে পড়িয়াছিলেন। র্তাহার আত্মীয় এ্যাটর্ণি প্ৰসন্নকুমার সেন (অধ্যাপক প্রিয়রঞ্জন সেন ও পুরীবাসী সাহিত্যিক কুমুদবন্ধু সেনের পিতা) ইংরেজী সাহিত্যে সুপণ্ডিত ছিলেন। তিনি বহু বিলাতী পত্রিকায় প্ৰবন্ধ লিখিতেন। মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্বে তিনি কোন বৈষয়িক কাৰ্য্য উপলক্ষে কুমিল্লায় যাইয়া দীনেশ বাবুর বাসায় প্ৰায় দুই সপ্তাহকাল ছিলেন। এই সময় দীনেশ বাবু কবিকঙ্কণ-চণ্ডীর বিশ্লেষণ করিয়া শুনান। তিনি এতটা মুগ্ধ হইয়াছিলেন যে, দীনেশ বাবুকে বলিয়াছিলেন “কি আশ্চৰ্য্য! আমাদের দেশী সাহিত্য যে এরূপ রত্বের ভাণ্ডার তাহা আমি জানিতাম না । এবার হইতে আমি ইংরাজি ও সংস্কৃত ছাড়িয়া দিয়া প্ৰাচীন বঙ্গ সাহিত্য ভাল করিয়া পাঠ করিব।” ইহার একমাস পরে তিনি হঠাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হন। নতুবা র্তাহার একনিষ্ঠ সাহিত্যসেবা বঙ্গ সাহিত্যের অনেক কাজে আসিত। এই সময় ইংরাজী সাহিত্যের ইতিহাস না লিখিয়া প্ৰাচীন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস লেখাই দীনেশচন্দ্রের জীবনের প্রধান লক্ষ্য বলিয়া তিনি স্থির করিলেন। কুমিল্লা ভিকটোরিয়া স্কুলের প্রধান পণ্ডিত চন্দ্ৰ কুমার কাব্যতীর্থ এবং অপরাপর সুহৃদাবর্গ এই বিষয়ে তাহাকে ক্ৰমাগত উৎসাহের ইন্ধন জোগাইতেন । ইহার মধ্যে র্তাহার। আর এক আবিষ্কার, শিক্ষিত সম্প্রদায়কে চমৎকৃত করিল। তিনি জানিলেন, ত্রিপুরার আরণ্য-পল্লীগুলিতে বহুসংখ্যক জীৰ্ণ তালপাতার ও তুলট কাগজের বাংলা পুথি আছে। এ পৰ্যন্ত