পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Nề& বাংলার পুরনারী অবশেষে কুমারী কলসী লইয়া জল ভরিতে গেল, কলসীর জল ফেলিয়া পুনরায় জল ভরিল—জল ভরিবার শব্দে চান্দ-বিনোদের কুড়া ডাকিয়া উঠিল। কুড়ার ডাক, সুন্দরীর জল ভরিবার শব্দ এবং গুরু গুরু মেঘ-গৰ্জনে চাদ-বিনোদের ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। সে চাহিয়া দেখিল এক পরম সুন্দরী অপসরার ন্যায় নিটোল-গঠন নারী ঘাটের এক পার্শ্বে দাড়াইয়া তাহাকে অপাঙ্গ দৃষ্টিতে দেখিতেছে। কিন্তু সেই সন্ধ্যায় লজায় উভয়ে কোন আলাপ করিতে, পারিল না । কিন্তু উভয়ের হৃদয়ে তোলপাড় আরম্ভ হইয়া গিয়াছে । “ভিন দেশী পুরুষ দেখি চাদের মতন, লাজ-রক্ত হৈল কন্যার প্রথম যৌবন।” প্ৰথম যৌবনের এই ব্যথা বুকে করিয়া কলসী কঁাখে লইয়া মলুয়া স্বীয় গৃহের দিকে রওনা হইল এবং চাদ-বিনোদও ধীর পাদক্ষেপে তাহার ভগিনীর বাড়ীর দিকে যাইতে লাগিল । পূৰ্ব্বারাগ চাদ-বিনোদ পথে যাইতে যাইতে “শুকনা কাননে যেন মহুয়ার ফুলে”র মত সেই রূপসী কন্যার কথা চিন্তা করিতে লাগিল ; এই কন্যা কি বিবাহিতা, না কুমারী ? যদি বিবাহিত হইয়া থাকে—তবে আর এই পল্লীতে আসিব না, কোন ঘোর বনে চলিয়া যাইব । কুড়া ! তুমি আমার মাকে জানাইও ‘চাঁদ-বিনোদ আর ঘরে ফিরিবে না।” “কি সুন্দর মূৰ্ত্তি, জলের পদ্ম যেন ডাঙ্গায় আসিয়া ফুটিয়াছিল, সঁাঝের দীপ যেন কেহ পুকুর ঘাটে অপরাহ্নে জ্বালাইয়াছিল ! আমি মুখখানি ভাল করিয়া দেখিতে পাই নাই, সে উত্তর দিকে মুখ ফিরাইয়াছিল ; ঘাট হইতে তাই সেই নিখুত মুখখানির সবটা দেখিতে পাইলাম না।” চাদ-বিনোদের চিন্তা-ধারা এইরূপ !