পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মলুয়া OND এদিকে মলুয়াও বাড়ী আসিয়া সারারাত্রি ঘুমাইতে পারে নাই। এই বাদলা রাত্ৰিতে অন্ধকারে পথহারা পথিক কোথায় গেল ? “কালি রাত্রি পোহাইল কার বাড়ীতে থাকি। কোথায় জানি রাখল। তার সঙ্গের কুড়া পাখী ॥ আসমানে থাকিয়া দেওয়া ডাকািছ তুমি কারে । ঐ না আষাঢ়ের পানি বইছে শত ধারে । গাঙ্গ ভাসে, নদী ভাসে, শুকনায় না ধরে পানি । এমন রাতে কোথায় গেল কিছুই না জানি ৷” পরদিন মলুয়া ভাল করিয়া খাইল না, সারাদিন একটা জানালার পাশে বসিয়া সেই আঁধা-পুকুরের পাড়ে দৃশ্যমান কদম গাছের উপরকার ডালের ফুলগুলি দেখিয়া কাটাইল। ভ্রাতৃ-বন্ধুরা নারী-চরিত্রে অভিজ্ঞ। তারা মলুয়ার এই পরিবর্তন লক্ষ্য করিল। তাহারা কাণা কাণি করিয়া কি বলিতে লাগিল ; শেষে মলুয়াকে বলিল, “চল আমরা একত্রে পুকুর ঘাটে যাইয়া সুান করিয়া আসি, সেখানে তোমার মনের কথা শুনিব । আমরা সঙ্গে গন্ধ-তৈল ও চিরুণী লইয়া যাইব, রাত্রের এলোমেলো চুল আবের কাকুই দিয়া আঁচড়াইয়া দিব।” “তোরে লইয়া ননদিনী যাব আমরা জলে। মনের কথা। কাইব গিয়া আমরা সকলে ॥” মলুয়া বলিল, “কাল একা পুকুর ঘাটে গিয়াছিলাম, এতে কি দোষ হয়েছে ? তোরা কি সব কণাকণি করিতেছিস।” তারা বলিল, “তুই একদিনে যেন আর এক রকমের হইয়া গিয়াছিস, “আজ যে দেখি ফোটা ফুল কাল দেখেছি কলি।” ভ্ৰাতৃ বধুরা মলুয়ার মানসিক পরিবর্তন সহজেই বুঝিতে পারিয়াছিল। মলুয়া শিরঃপীড়ার ছুতো দিয়া তাহাদের সঙ্গে গেল না । কিন্তু দিবা-অবসানে তাহার মন আর ঘরে থাকিতে চাহিল না । “দুপুর বেলা গেল কন্যার ভাবিয়া চিন্তিয়া । বিকাল বেলা গেল কন্যার বিছানায় শুইয়া । R {