পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

zTRV3 পুরনারী ܠܬ দধি-চিড়া, কোথাও ফল, কোথাও উপবাস, কোথাও বৃক্ষতলে সমতল ঘাসের প্রান্তরের উপর উপবেশন ও বিশ্রাম-এইভাবে জীবনের সুখ সুবিধা ও স্বাস্থ্যের প্রতি ভ্ৰক্ষেপহীন কত রাত্রি, কত দিন কাটিয়া গিয়াছে! এই অভিযানে কত অপূর্ব আবিষ্কার তাহাদিগকে উদ্দীপিত করিয়াছে। পরাগল খায়ের আদেশে রচিত মহাভারত, ছুটিখার অশ্বমেধ পৰ্ব্ব, সঞ্জয়ের মহাভারত, চন্দ্রাবতীর মনসাদেবীর ভাসান, আলাওলের পদ্মাবৎ ইত্যাদি অজ্ঞাত-পূর্ব শত শত পুথি দীনেশবাবু আবিষ্কার করিয়াছিলেন। সুরেশ সমাজপতি-সম্পাদিত “সাহিত্য” এবং অন্যান্য পত্রিকায় তাহা প্ৰকাশিত হইয়াছে। এই সময় দীনেশ বাবু বঙ্গের পল্লীর এই বিরাট সম্পদের সংক্ষেপে পরিচয় দিয়া এসিয়াটিক সোসাইটির ডাক্তার হোরণেলের নিকট একখানি চিঠি লিখিয়াছিলেন। তিনি তঁহাকে বিশেষ উৎসাহিত করিয়া হরপ্ৰসাদ শাস্ত্রী মহাশয়কে এই প্ৰচেষ্টায় সহায়তা করিবার জন্য অনুরোধ করেন। দীনেশ বাবুর সংগৃহীত প্ৰায় তিন শত পুথি এসিয়াটিক সোসাইটি পণ্ডিত বিনোদবিহারীর মারফৎ ক্রয় করেন। পণ্ডিত মহাশয় পুথির মালিকাদিগের সঙ্গে বন্দোবস্ত করেন,-যে পৰ্যন্ত দীনেশবাবুর পুস্তকের জন্য প্রয়োজন হইবে, সে পৰ্যন্ত পুথি ভঁহারই নিকট থাকিবে। পূর্ববঙ্গের নানা স্থানে স্বয়ং পুথি সংগ্ৰহ করা ছাড়াও দীনেশচন্দ্ৰ পত্ৰ দ্বারা বহু পুথি সন্ধান করিয়াছিলেন। উদ্ধারণ দত্তের বংশধর হুগলী বদনগঞ্জ নিবাসী হারাধন দত্ত ভক্তিবিনোদ, শ্ৰীহট্টের অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি প্ৰভৃতি পণ্ডিতের সঙ্গে পত্রদ্বারা পরিচয় স্থাপন করিয়া দীনেশ বাবু অনেক সহায়তা প্ৰাপ্ত হন। কৃত্তিবাসের আত্মবিবরণটি হারাধন দত্ত মহাশয় তাহার গৃহস্থিত প্ৰাচীন রামায়ণের পুথি হইতে নিজ হস্তে নকল করিয়া দীনেশ বাবুকে পাঠান। র্তাহার পুথিশালায় যে এই মূল্যবান ঐতিহাসিক বিবরণটি ছিল, তাহা তিনি নিজেই জানিতেন না। দীনেশ বাবু উপযুপরি পত্রদ্বারা র্তাহাকে খোচাইয়া তাহার পুথিশালা হইতে তাহ বাহির করেন। এই বিবরণটি “বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের” প্ৰথম সংস্করণেই উদ্ধৃত হইয়াছিল। সুপ্ৰসিদ্ধ গোবিন্দ দাসের করচার খোেজও বৈষ্ণব শিরোমণি অচ্যুত বাবুই দীনেশ বাবুকে দিয়াছিলেন।