পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Šთ\ს বাংলার পুরনারী কাজি সাহেব। আর একটা চক্রান্ত করিলেন । সে দেশে এক প্ৰবল পরাক্রমশালী জমিদার ছিলেন—তাহার চরিত্র দুষ্ট ছিল,-এই তরুণ জমিদার চর পাঠাইয়া পরের সুন্দরী স্ত্রী খুজিতেন। কাজির লোকেরা র্তাহাকে খবর দিল যে, সূত্যা নদীর পারে এক পল্লীতে চান্দ-বিনোদের এক পরমাসুন্দরী স্ত্রী আছে। এই সংবাদ পাওয়া মাত্র তিনি ষড়যন্ত্র করিয়া একটা মিথ্যা মামলায় ফেলিয়া বিনোদকে হত্যাপরাধে ধরাইয়া দিলেন। বিচারকের আদেশ অনুসারে বিনোদকে . নিলক্ষার মাঠে জীয়ন্ত পুতিয়া ফেলিবার ব্যবস্থা হইল। এদিকে জমিদারের নিযুক্ত দসু্যর দল মলুয়াকে জোর করিয়া বাড়ী হইতে জমিদারের গৃহে লইয়া 6ीक । মলুয়া বিপদে পড়িয়া তাহার পোষা কুড়ার মুখে চিঠি দিয়া পিত্ৰালয়ে ভাইদের কাছে পাঠাইয়াছিল। সশস্ত্ৰ পাচ ভাই নিলক্ষার মাঠে যাইয়া দেখিল, বিনোদকে পুতিয়া ফেলিবার জন্য মাটি খোড়া হইতেছে। এই অবস্থায় তাহারা সেই সকল উৎপীড়কদিগকে মারিয়া ধরিয়া বিনোদকে ছাড়াইয়া লইয়া আসিল, কিন্তু তখন তাহারা দেখিল মলুয়াকে জমিদারের লোকজন দসু্য সাজিয়া ধরিয়া লইয়া গিয়াছে। বিনোদের মা মাটিতে অজ্ঞান হইয়া পড়িয়া আছেন। বিনোদ তাহার কুড়াটিকে লইয়া বনবাসী হইল । এদিকে জমিদার মলুয়াকে অনেক প্রলোভন দেখাইলেন। সে বলিল -“আমি একটি সঙ্কল্প করিয়া ব্ৰত গ্ৰহণ করিয়াছি। তিন মাস পরে সেই ব্ৰতের উদযাপন হইবে। আপনি এই তিন মাস সবুর করিয়া থাকুন। এই সময় যেন কোন পুরুষের মুখ আমাকে দেখিতে না হয়। এই তিন মাস খাটের উপর শুইব না, মেঝেতে আঁচল পাতিয়া শয়ন করিব । কাহারও সম্পূষ্ট অন্নজল খাইব না। এই তিন মাস আমার গৃহে আপনি আসিবেন না, তারপর ব্ৰত সমাধা করিয়া আমি আপনার ইচ্ছা পূর্ণ করিব। যদি ইহার অন্যথা করা হয়—তবে জানিবেন আমি বিষ খাইয়া মরিব ।” জমিদার এই তিন মাস প্ৰতীক্ষা করিলেন । তিন মাস তো বসিয়া রহিল না, তাহার একদিন অন্ত হইল ।