পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

औौथा बँबू २२१ রীর বিবাহ বঁাশী আর বাজে না । কন্যা বড় হইয়াছে, রাজা তাহাকে সেই সাধের বাগানে যাইতে মানা করিয়া দিয়াছেন। ফাস্তুন মাসে বাগান ভরিয়া ফুলের কলি হইল। চৈত্র মাসে কলিগুলি ফুটিয়া সুবাস ছড়াইল। বৈশাখ আসিল, বৃক্ষ হইতে পুরাতন পাতা ঝরিয়া পড়িতে লাগিল, অতি দারুণ গ্রীষ্মে কোকিলের কণ্ঠের স্বর থামিয়া গেল। বঁাশী আর বাজে না। নূতন বৎসর আসিয়াছে। সাগর-মন্থনের পর যে বিষ উঠিয়াছিল, রাজকুমারীর মন সেইরূপ বিষে ভরিয়া গেল। বৈশাখের ফোটা ফুলের গন্ধে বাগান ভরপুর, ভ্রমরেরা গুঞ্জন করিতে করিতে বাগানের দিকে ছুটিতেছে। রাজকুমারী সেই ভ্ৰমরের মত লুব্ধ চিত্তে বাগানের দিকে চাহিয়া থাকেন, কিন্তু রাজার মানা বাহিরে যাইতে পারেন না । তারপর একদিন ঘটক আসিল । ঢোল, দগড় বাজিতে লাগিল, নটের নাচিতে লাগিল। সেই বাদ্যের উচ্চ কলরবের মধ্যে,--নাচ-গানের প্রমোদউৎসবের মধ্যে রাজকুমারীকে বিবাহ করিয়া এক প্রিয়দর্শন রাজকুমার ভিন্ন দেশে ভিন্ন রাজপুরীতে লইয়া গেলেন। খেলার ঘর ভাঙ্গিয়া পড়িল, এত সাধের গাথা মালা বাসি হইল । রাজকুমারীর মুখের সেই পাগল-করা হাসি, যাহার চম্পক-উজ্জল রূপে সকলকে মুগ্ধ করিত, সেই হাসির দিন ফুরাইল। দিনে দিনে চাচর সুন্দর কেশ পাটের আঁসের মত হইল, কে আর বেণী বঁধে, কে আর গন্ধ-তৈল ও ধূপের ধোঁয়ায় তাহা সুবাসিত করে ? নৃত্যগীত-বাদ্যধ্বনির মধ্যে নিস্তব্ধ একখানি পাষাণ-প্ৰতিমাকে যেন স্বর্ণ-চৌদোলায় করিয়া বিসর্জনের জন্য লইয়া গেল।