পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Svo বাংলার পুরনারী অন্ধের গৃহত্যাগ রাজকুমারী চলিয়া গিয়াছেন, অন্ধের বঁাশীর সুর থামিয়া গিয়াছে ; পাগল বঁাশীর গান আর শোনা যায় না,-ভাটিয়াল নদী আর উজান বহে না, রাজবাড়ীর পিঞ্জরের পাখীরা শেষরাত্রে আর প্রত্যুষের পূর্বে কলরব করিয়া উঠে না, গান শুনিয়া আর লোকের মিষ্ট আবেশে ঘুম ভাঙ্গে না। অন্ধ যুবক রাজাকে যাইয়া বলিল, “মহারাজ ! আমাকে বিদায় দিন, আমি অন্যত্র যাইব ।” রাজা বলিলেন “সে কি কথা ! তোমার কোন অভাব-অভিযোগ থাকে আমাকে বল, আমি এখনই তাহা পূরণ করিব। “আমি ভাবিয়াছি, পরমাসুন্দরী এক কন্যার সঙ্গে তোমার বিবাহ দিব। আমাদের পদ্ম-দীঘির মাঝখানটায় একটা জলটুঙ্গী ঘর নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিব, সেখানে বহু দাস-দাসী তোমার সেবা করিবে । “এক দুঃখ অন্ধ নয়ান দিতে না পারিব।” “রাণী তোমাকে কত ভালবাসেন, আমি তোমাকে পিতৃতুল্য স্নেহ করি, তুমি কিসের দুঃখে এই রাজ্য ছাড়িয়া যাইতে ইচ্ছা করিয়াছ !” অন্ধ বলিল, “মহারাজ ! আমি আপনার ও রাণীমার স্নেহের কথা বলিতে পারি না। আমার চক্ষু নাই, এই অবস্থায় সকল দুঃখের মধ্যে আমার প্ৰধান দুঃখ এই যে আমি আমার পিতৃমাতৃ-তুল্য স্নেহশীল ও পরম উপকারী আপনাদের দুইজনের মুখ দেখিতে পাইলাম না। আমার বঁাশী আমার শত্ৰু, কোন স্থানে বেশী দিন থাকিতে দেয় না, এ আমার অদৃষ্ট্রের দোষ, কি করিব ! যখন বঁাশী ফুকারিয়া কি এক অজানা বেদনায় কঁাদিয়া উঠে, তখন সেই সুর জোর করিয়া আমায় ঘরের বাহির করে।” “বঁাশী আমার জীবন মরণ বঁাশী আমার প্রাণ । মরণ-জীয়ন, ধরম-করম ঐ না বঁাশীর গান ৷