পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$లీe বাংলার পুৱনারী “বাজিতে বাজিতে বঁাশী রাজ্য ছাড়াইল । দূরের রাজার দেশে কঁাদিয়া উঠিল।” এক ভিন্ন দেশের রাজার মুলুক ; বঁাশীর স্বর শুনিয়া সে নগরের লোকের ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল, গাছের পাতায় ফুলের কলি ঘুমাইয়া ছিল, বঁাশী তাহাদের ঘুম ভাঙ্গাইয়া দিল, ফুলের বুকে ভ্ৰমর ঘুমাইতেছিল, বঁাশীর সুর সেই ভ্ৰমরের ঘুম ভাঙ্গিয়া ফেলিল । রাজকুমারী একটি ফুলের হারের মত রাজার বুকে শুইয়াছিলেন, তিনি সেই সুর শুনিয়া কি যেন হারানো স্বপ্নের ধান কুড়াইয়া পাইলেন। নগরের প্ৰান্তে নদীর পাড় ও পর্বত একটা নিস্তব্ধমূৰ্ত্তির মত ঘুমে নিঝুম হইয়াছিল-- এবার তাঁহাদেরও ঘুম ভাঙ্গিবার মত একটা আবেশ দেখা দিল। কেবল নদীটি জাগ্রত ছিল—সারাদিন সারারাত্রি তাহার ঘুম নাই, আর ঘুম নাই বিরহিনীদের, ইহারা গুমরিয়া গুমরিয়া কঁাদিতেছিল, কে তাহদের কান্না Çnicoi ? এই দেশে অতি প্ৰত্যুষে বঁাশী বাজিয়া উঠিল। কোকিল আধ-ঘুমে সাড়া দিয়া উঠিল, ফুলের কলির বুকে ভ্রমর, ঘুমে ঢুলু ঢুলু আঁখি সেই বঁাশীর সুরে জাগিয়া কি খুজিতে লাগিল, এ কি বনের বঁাশী না মনের বঁাশী ? বিদেশী পথিকের বঁাশী কি সুরে বাজিয়া উঠিল, সেই সুরের সঙ্গে আকাশের গায়ে কে যেন কামনা সিন্দুর মাখিয়া দিল। অদ্ভুত প্ৰতিশ্রুতি রাজকুমারী কি ভাবিতেছেন ? দুই গণ্ড বহিয়া অশ্রু ঝরিতেছে—তিনি মনে মনে বলিতেছেন, ও সুর চিনেছি, সেই সুর যাহা নদীর স্রোতের মত টানিয়া আমাকে আমাদের সেই যুথি-জাতি-বেলা-কুন্দের বাগানে লইয়া যাইত। এ সুর পৃথিবীতে আর কেহ জানে না, এ বঁাশী আর কাহারও নয়।