পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ8Հ বাংলার পুরুজারী রাজকুমারীর যৌবন রাজার একটি মাত্র কন্যা, তাহার বয়স ১০:১১, রাজাদের ঘরেও আমন সুন্দরী সহজে দেখা যায় না। যখন বসিয়া থাকে, তখন তাহার লম্বিত কেশপাশ মৃত্তিকা স্পর্শ করে। সে হাসিলে যেন কত পদ্ম কত চাঁপা হাসিতে থাকে, দাতগুলি কি সুন্দর, যেন ডালিমের দানা। পাঁচটি সহচরীর সঙ্গে সে খেলিয়া বেড়ায় । ক্রমে কিশোরীর যৌবনাগম হইল। এই সময়টি নারী-দেহে কেমন করিয়া আসে তাহা সে নিজেই টের পায় না, অকস্মাৎ অনভ্যস্ত লজ্জায় তাহার মুক্ত অঙ্গ শিহরিয়া উঠে, ভ্রমরগুঞ্জনে প্ৰাণ উতলা হয়, কোকিলের ডাকে কি জানি কোন দেশের কথা মনে হয় । একদিন কুমারী শিলা সখীদের বলিল, “আমার যদি গায়ে কোন সময় কাপড়ে ঢাকা না থাকে, তবে আমারে বলিয়া দিও, আমি শাড়ী টানিয়া তাহী ঘিরিয়া রাখিব। যদি চুল বাধা না থাকে, তবে বলিয়া দিও, এলো চুলে থাকিতে আমার লজ্জা হয়।” সখীরা বলে, “এ সকল কথা, এভাবের কথা, তুমি আগে তো বল নাই, তোমার কি হইয়াছে ? এই অকস্মাৎ লজ্জা এই সম্রামের ভাব তোমার কেন হইল।” শিলা হাসিয়া বলিল, “তা তো আমি জানি না, তবে যিনি আমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন, তিনি আমার চারিদিকটা যেন আবার ভাঙ্গিয়া চুরিয়া নূতন করিয়া গড়িতেছেন। পুরাতন সকল জিনিষের উপর দরদ চলিয়া যাইতেছে, মন কেন যে উতলা হইয়া থাকে তাহ জানি না । খেলার ঘরে আর যাইতে ইচ্ছা হয় না, মনে হয় মাটীর পুতুল, মাটীর রান্না-বাড়ীর পাত্র, ডেগ কড়াই এ সকল লইয়া কি ছেলেমি করিতেছি । চিরদিন যাহা করিয়া আসিতেছি তাহা এখন করিতে লজ্জা হয়।” নিরালায় সখীরা বলিল, “তোমার মনের মধুকর আসিতেছে, এ সকল তাহারই সূচনা। আমাদের দেওয়া শাড়ী আর তোমার পছন্দ হইবে না,