পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলা দেবী S89) সে নূতন শাড়ী আনিয়া দিবে, আমাদের হাতের বেশী বাধা আর ভাল লাগিবে না, সে সোণার চিরুণী দিয়া তোমার চুল আঁচড়াইয়া নিজ হাতে নূতন ছন্দে খোপা বাধিয়া দিবে। হয়ত কাণের এই মতির দুল খুলিয়া সে তাহার নিজ হাতের তৈরী বন-ফুলের দুল কাণে পরিয়া দিবে, এই কাজল মুছিয়া নূতন কাজল চােখে আঁকিয়া দিবে। তোমার তখন সংসার ভাল লাগিবে, আমাদের আর দরকার হইবে না।” কুমারী শিলা, বালিকার মত খিল খিল করিয়া হাসিয়া বলিল, “কি সকল কথা বলিতেছিস, আমি তাহার এক বর্ণও বুঝিলাম না। যেন কোন বই পড়িয়া শুনাইতেছিস, আমি তাহার অর্থ একটুও বুঝিলাম না।” সখীরা বলিল, “বুঝিবে সকলই বুঝিবে, আমাদিগকে তাহা বুঝাতে হবে না, নিজেই সব বুঝিবে, কিছু কাল সবুর করা। রাজা চারদিকে ঘটক পাঠাইয়াছেন, তোমার মন-মধুকর শীঘ্ৰ আসিয়া মনের সকল প্রশ্নের উত্তর দিবে।’ মুণ্ডার অদ্ভুত প্রার্থনা এক দিন দুই দিন করিয়া সময় পায়ে পায়ে হঁটে । দেখিতে দেখিতে পাঁচ ছয় বৎসর কাটিয়া গেল। একদিন দরবারে আসিয়া মুণ্ডা বলিল, “মহারাজ আমাকে বিদায় দিন, আমি ত্রিপুরা সহরে যাইব । আমি এই পাঁচ ছয় বৎসর আপনার রাজধানীতে প্ৰাণপণে খাটিয়াছি, আমার প্রাপ্য চুকাইয়া দিন।” রাজা বলিলেন, “চল তোমাকে লইয়া আমার ধনাগারে যাই, তোমার সঙ্গে কোন বেতনের চুক্তি হয় নাই। কিন্তু তোমার তাহাতে কোন ক্ষতির কারণ হইবে না। তুমি যাহা চাও, তাহাই দিব, তোমার কোন ক্ষোভের কারণ না হয়-তজন্য আমি দায়ী আছি।”