পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Shoyo বাংলার পুরনারী প্ৰায় ২৩|২৪ বৎসর কাল দীনেশ বাবু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং বাংলা বিভাগের কর্ণধার ছিলেন । এই সময় তিনি অধিকাংশ পুস্তকই ইংরেজীতে লিখিয়াছেন। কিন্তু তাই বলিয়া বাংলা লেখা তিনি ছাড়িয়া দেন নাই। ইহার মধ্যে তিনি “ওপারের আলো’, ‘নীলমণিক’ “আলো আধারে’, ‘চাকুরীর বিড়ম্বনা’, ‘তিনবন্ধু’, ‘সঁাজের ভোগ', 'বৈশাখী’ প্রভূতি কতকগুলি উপন্যাস রচনা করেন । নীলমণিক নামক গল্পের বইএর বিস্তৃত সমালোচনা বিলাতের Times পত্রিকায় প্ৰকাশিত হইয়াছিল। “গৃহশ্ৰী’র ১৮শ সংস্করণ চলিতেছে। দীনেশ বাবুর শেষ দিককার সাহিত্যিক প্রচেষ্টাও কম মূল্যবান নহে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় হইতে অবসর গ্ৰহণ করিয়া ‘বৃহৎ বঙ্গ” নামক অপূর্ব ও বিরাট ঐতিহাসিক গ্ৰন্থ প্ৰণয়ন করেন । ৪৫ বৎসরের প্রাণান্ত চেষ্টায় এই বইখানি লিখিত হয়। বাংলা দেশের সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থ-নীতি ও ধৰ্ম্ম এবং সুকুমার কলা সম্বন্ধে যাহারা কিছু জানিতে চাহিবেন, এই পুস্তকখানি তাহদের অপরিহাৰ্য্য সঙ্গী স্বরূপ হইবে । এই একখানি বই পড়িয়া লোকে বঙ্গদেশ সম্বন্ধে যে অভিজ্ঞতা লাভ করিবে, স্বয়ং দীর্ঘকাল বঙ্গের পল্লীতে পল্লীতে ঘুরিয়াও পাঠক সেরূপ তত্ত্বগ্রাহী হইতে পারিবেন না । বঙ্গবাসী এই পুস্তক সাদরে গ্ৰহণ করিয়াছে, নতুবা অল্প দিনের মধ্যে ৪০ ০০২ টাকার পুস্তক বিক্রয় হইবে কিরূপে ? বিশ্ববিদ্যালয় এই পুস্তক প্ৰকাশ করিয়া বাঙ্গালী মাত্রেরই ধন্যবাদাহঁ হইয়াছেন। দীনেশ বাবুর অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদান, ময়মনসিংহ গীতিকা (নামান্তর পূর্ববঙ্গ গীতিকা ) । শ্ৰীযুক্ত চন্দ্ৰ কুমার দে নামক এক দুঃস্থ ও ভগ্ন-স্বাস্থ্য যুবকের ‘কেনারাম’ শীর্ষক একটি ক্ষুদ্র প্রবন্ধে উদ্ধৃত গুটিকতক পংক্তি পাঠ করিয়া তিনি বুঝিতে পারেন যে, বঙ্গীয় পল্লীবাসীদের গল্প বলিবার একটা বিশেষ ভঙ্গী আছে। এই প্ৰবন্ধটি ময়মনসিংহের ‘সৌরভ’ নামক একটি পত্রিকায় প্ৰকাশিত হইয়াছিল ও তাঁহাতে উক্ত কবিতার মাত্র ৮/১০টি পংক্তি উদ্ধত হইয়াছিল। দীনেশ বাবু চন্দ্ৰ কুমার দের খোজ করিয়া জানিলেন, তিনি অতি নিঃস্ব, লেখা পড়া সামান্যই জানেন, এবং সম্প্রতি মস্তিষ্ক রোগে আক্রান্ত হইয়া একবারে কাজের বাহির হইয়া গিয়াছেন। ঐ কেনারামের মূল কবিতাটি পাওয়া