পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন-কথা Se/o যায়। কিনা, বহু অনুসন্ধান করিয়াও তিনি তাহার সন্ধান পাইলেন না। দুই বৎসর পরে চন্দ্ৰকুমার কতকটা সুস্থ হইয়া কলিকাতায় আসিয়া দীনেশ বাবুর সহিত সাক্ষাৎ করেন। তিনি দীনেশ বাবুর অনুরোধে আরও দুই একটি পল্পী গীতি সংগ্ৰহ করিয়া অনিয়াছিলেন। দীনেশ বাবু বুঝিলেন, এই কবিতা কয়েকটি খাটি সোণার খনি হইতে পাওয়া। চন্দ্ৰকুমার বাবু গ্ৰাম্য কৃষকদের সঙ্গে মিশিয়া এই গীতিগুলির প্রতি অনুরক্ত হইয়াছিলেন, কিন্তু দীনেশ বাবু যখন র্তাহাকে এইগুলি সংগ্ৰহ করিতে বলিলেন, তখন তিনি ভড়কাইয়া গেলেন এবং বলিলেন, “এগুলি নিরক্ষর কৃষকদের গান, ইহাদের ভাষা পূর্ববঙ্গের পল্লীর নিতান্ত অমাজ্জিত ভাষা, শিক্ষিত সমাজ এসব গান পাঠ করিয়া ঠাট্টা করিবো।” কিন্তু দীনেশ বাবুর একান্ত আগ্রহ ও আশুবাবুর প্রদত্ত আর্থিক সাহায্য ও উৎসাহ পাইয়া তিনি অবশেষে এই কাৰ্য্যে উৎসাহ দেখাইলেন। দীনেশ বাবু এই সকল পালাগানের সৌন্দৰ্য্যে মুগ্ধ হইলেন । ইউনিভারসিটির আর্থিক অবস্থা তখন অতীব শোচনীয়। গভর্ণমেন্টের সঙ্গে আশুবাবুর নানা বিষয়ে মতান্তর হওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারী দান বন্ধ হইয়া গিয়াছিল, তথাপি তিনি অবিরত দীনেশ বাবুকে উৎসাহ দিলেন এবং প্রথম খণ্ডের ইংরেজী অনুবাদ ও মূল কবিতা এই দুই ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ে প্ৰকাশিত হইল। মহুয়ার ইংরেজী অনুবাদ পড়িয়া ইউরোপের পণ্ডিত মণ্ডলী বঙ্গীয় নিরক্ষার চাষাদিগের কবিত্ব-শক্তির পরিচয় পাইয়া চমৎকৃত হইলেন। তৎকালীন বঙ্গের লাট লর্ড রোনালন্ডসে (বৰ্ত্তমানে লর্ড জোটল্যাণ্ড) প্ৰথম খণ্ডের একটি ভূমিকা লিখিলেন এবং বিলাতের বহু মণীষী পণ্ডিত এই গীতিকাগুলির বিশেষ প্ৰশংসা করিয়া নানা বিলাতি পত্রিকায় সমালোচনা করিতে লাগিলেন । এই সময় দীনেশচন্দ্ৰ বঙ্গেশ্বর লিটন সাহেবকে পল্লী-গীতিকাগুলি প্ৰকাশের ব্যয়ের জন্য আবেদন করিলেন । এবং সেই আবেদনের ফলে কয়েক সহস্র টাকা সরকারের মঞ্জুরী পাওয়া গেল। পূর্ববঙ্গের অন্যান্য স্থান হইতে এই পল্লী গাথাগুলি পাওয়া যাইতে লাগিল এবং দ্বিতীয় ভাগে ইহার ময়মনসিংহ গীতিকা নামটি পরিবৰ্ত্তিত হইয়া “পূর্ববঙ্গ গীতিকা” নাম দেওয়া হইল। কৰ্ম্ম আরও অনেক আসিয়া জুটিল। দীনেশ বাবু বিস্তারিত ভাবে লিখিত উপদেশ দিয়া ইহাদিগকে মফঃস্বলে