পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাৰ্থিকতার VeMA মাহুর পাতিয়া বসিয়া কতকগুলি চিড়া ও ‘চিনি চাম্পা”, কলা খাইয়া পেট ভরাইল। অদূরে রাখালরাজার দীঘি, জল অতি নিৰ্ম্মল স্ফটিকের মত স্বচ্ছ। সেই জল অঞ্জলি ভরিয়া পান করিয়া কানু দলের লোকদিগকে বলিল, “তারা টাকার থলিয়া লইয়া এই দীঘির পাড় দিয়া যাইবে । আজ ভাগ্যে শুক্রবার, কালু আজ আর বাহির হইবে না, জুম্মাবারে তারা দারু খায় না, সুতরাং এটা মস্ত বড় সুযোগ, তোরা এখানে বসিয়া থাক । তোড়া লুটিয়া চলিয়া যাইবি, আর শত্রু পক্ষীয় কাহাকে পাইলে দরকার হইলে এই দীঘিতে কাটিয়া ফেলিয়া কালোজল লাল করিয়া ছাড়বি।” অল্পক্ষণ মধ্যেই দূর হইতে গরুর গাড়ীর “ঘ্যার ঘ্যারানি” শব্দ শোনা গেল। কানু বলিল, “ওই আসিতেছে, তোরা ঠিক হইয়া লাঠি হাতে দাড়া।” ইহার মধ্যেই হুম। হুম করিয়া ছয় জন জোয়ান মর্দ ছয়টা বড় টাকার তোড়া মাথায় করিয়া আসিয়া পড়িল, একজন ঘোড় সোয়ার, তাহাদের অগ্ৰবৰ্ত্তী পাহারা। হঠাৎ ঘোড়ার পায়ে ধূপ করিয়া লাঠির বাড়ি পড়িল এবং ঘোড় সোয়ারের মুণ্ডটা সেইখানে গড়াইয়া পড়িল। ছয়টি বাহকের মৃতদেহ পরীক্ষণেই দীঘির পাড়ে পড়িয়া রহিল এবং তাহদের মাথার টাকার তোড়া অদৃশ্য হইল। কানু সেই টাকার তোড়াসহ কয়েকজন লোক ও বাসুকে গঞ্জের হাঢ়ে বাড়ীতে পাঠাইয়া দিল। কিন্তু ইহার মধ্যেই রাখালরাজার দীঘির পাড়ে একটা ধ্বস্তাধস্তি কাণ্ড উপস্থিত হইয়াছে। কালু। সর্দার কোন ক্রমে সংবাদ পাইয়াছে যে তাহার মুখের শিকার কানু ও তাহার দলে লইয়া গিয়াছে। অবিলম্বে কালু সর্দার পঞ্চাশ জন লোক লইয়া কানু ও তাহার দলকে অনুসরণ করিল। কানু ও তাহার দলের পাঁচ জন লোক বন্দী হইল। কালুর হুকুম কালু সর্দার হুকুম দিল-“ঐ শালা কানুকে বাঁধ নায়ের গুড়া দিয়া” পাঁচ জন লোককে পিঠ মোড়া করিয়া হাত বঁাধিয়া তাহারা নৌকায় উঠাইল ।