পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So বাংলার পুরনারী গীতিকা সংগ্ৰহ করিতে নিযুক্ত করিলেন। সংগ্রাহকদের মধ্যে প্ৰধান শ্ৰীযুক্ত চন্দ্ৰ কুমার দে ছাড়াও শ্ৰীযুক্ত আশুতোষ চৌধুরী, বিহারী লাল চক্ৰবৰ্ত্তী, প্ৰভৃতি আরও কয়েকজন উৎকৃষ্ট গীতিকা সংগ্ৰহ করিয়াছেন । মূল ও বঙ্গানুবাদ সমেত, চারি খণ্ডে (৮ ভাগে) গভর্ণমেণ্টের অৰ্দ্ধেক আর্থিক সাহায্যে এই গীতিকাগুলি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্ৰকাশিত হইয়াছে। এই কয়েক খণ্ডে মোট ৫৮টি গীতিকা প্ৰকাশিত হইয়াছে। ইহাদের প্রশংসা যে কিরূপ উচ্ছ,াসপূর্ণ তাঁহা নিম্নোদ্ধত কয়েকটি ছত্ৰে প্ৰতিপন্ন হইবে - রবীন্দ্ৰনাথ লিখিয়াছেন “বাংলা প্ৰাচীন সাহিত্যে মঙ্গল কাব্য প্ৰভৃতি কাব্যগুলি ধনীদের ফরমাসে ও খরচে খনন করা পুষ্করিণী, কিন্তু ময়মনসিং গীতিকা বাংলা পল্লীহৃদয়ের গভীর স্তর থেকে স্বত উচ্ছসিত উৎস, অকৃত্রিম বেদনার স্বচ্ছ ধারা । বাংলা সাহিত্যে এমন আত্মবিস্মৃত রসসৃষ্টি আর কখনো হয়নি। এই আবিষ্কৃতির জন্যে আপনি ধন্য ।” একটি বিখ্যাত ফরাসী চিত্ৰ-সমালোচক লিখিয়াছিলেন “এই গীতিকাগুলি জগতের সাহিত্যের প্রথম পংক্তিতে স্থান পাইবে এবং যুগে যুগে ভবিষ্যৎ বংশীয় পাঠকেরা ইহাদের নব নব সৌন্দৰ্য্য আবিষ্কার করিবে, নারী চরিত্রগুলি সেক্ষপীয়র ও রেসনির রমণী চরিত্রের মত যুরোপের ঘরে ঘরে পাঠ হওয়ার যোগ্য। মেটারলিঙ্কের নাটকে খুৎ ধরা যায়। কিন্তু এগুলি একবারে নিখুৎ ।” বিলাতের সুবিখ্যাত চিত্ৰশিল্পী ও সমালোচক সার উইলিয়াম রাথন ষ্টাইন লিখিয়াছেন, “অজন্তা, বাগ ও ইলোরা প্ৰভৃতি স্থানে যাহা চিত্রিত দেখিয়াছিলাম, ভারতনারীর সেই অপরূপ রূপ বঙ্গাপল্পী-গীতিকায় জীবন্ত হইয়া উঠিয়াছে।” সিলভা লেভি বলিয়াছেন—“আমাদের শীতাৰ্ত্ত প্ৰকৃতির ক্ৰোড়ে বসিয়া মহুয়া পাঠ করিয়া মনে হইল, ভারতের উষ্ণ আবহাওয়ায় শীত ও বসন্ত ঋতুর দৃশ্য উপভোগ করিতেছি—নায়ক-নায়িকার প্ৰেম-কথা অপূর্ব পরিবেষ্টনীর মধ্যে কি সুন্দরভাবে বিকাশ পাইয়াছে।”