পাতা:বাংলার পুরনারী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণিকতার veNey অবশ্য তিনি বহুদিন হইতে ম্যালেরিয়া রোগে ভুগিতেছিলেন, কিন্তু তথাপি আমরা তঁহার এই আকস্মিক মৃত্যুর জন্য প্ৰস্তুত ছিলাম না। আরও দুঃখের বিষয় এই পালাটি তিনভাগে বিভক্ত, তাহার প্রথমাংশ বিহারী বাবু সংগ্ৰহ করিয়া গিয়াছেন। তিনি কাহার নিকট হইতে এই অংশ পাইয়াছিলেন এবং অপর দুই ভাগ কোথায় পাওয়া যাইবে, তাহার কোন সন্ধানই আমাকে দিয়া যাইতে পারেন নাই। শেষ পত্রে তিনি কেবল এই লিখিয়াছিলেন যে, পালাটি দীর্ঘ এবং একজন গায়েন সমস্ত পালাটি জানে না, যাহারা বাকী দুইভাগ জানে—তাহদের বাড়ী কতকটা দূরে ; সুতরাং সমগ্ৰ পালাটি সংগ্ৰহ করিতে একটু বিলম্ব হইবে। কিন্তু এই বিলম্ব চিরদিবসের বিলম্বে পরিণত হইল। পালায় বর্ণিত স্থানগুলি ঘটনাটির লীলাস্থল, ব্ৰহ্মপুত্র নদ, গঞ্জের হাট, খড়াইএর খাল, বাইলা খালি, দশকাহণিয়া, সেরপুর প্রভৃতির উল্লেখ দ্বারা স্পষ্টই মনে হয় যে সেরপুর অঞ্চল খোঁজ করিলে হয়ত এই গানের অবশিষ্টাংশ মিলিয়া যাইতে পারে, আমি এতদৰ্থে চেষ্টার ক্রেটা করি নাই। প্ৰথমতঃ চন্দ্ৰকুমার দে মহাশয়কে পাঠাইয়াছিলাম। তিনি এই গানের কিছু কিছু ভগ্নাংশ সংগ্ৰহ করিলেও বাকী অংশ উদ্ধার করিতে পারেন নাই। শ্ৰীযুক্ত আশুতোষ চৌধুরী এবং কবি জসিমুদ্দিন সেরপুরে যাইয়া বিফল মনোরথ হইয়া ফিরিয়া আসিলেন। বিহারী বাবুর বাড়ীতে পরিত্যক্ত কাগজপত্ৰ হইতে এই গানটির কোন হদিস পাওয়া গেল না, তথাপি আমি এসম্বন্ধে নিরাশ হই নাই-ভাবিয়াছিলাম একদিন না একদিন আমার চেষ্টা সাফল্যমণ্ডিত হইবেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে কাজ হইতে অবসর দেওয়াতে আমার যে সুযোগ সুবিধা ছিল, তাহা চলিয়া গেল। তাহার পরেও আমি চেষ্টা করিয়াছি, কিন্তু এই পল্পী-গীতিকা সংগ্ৰহ করিতে যে ধৈৰ্য্য ও সহিষ্ণুতার দরকার হয়—তাহ সময় সাপেক্ষ । কিছু দিন সেই স্থানে থাকিয়া নানাজনের দ্বারা চেষ্টা না করিলে সে কাজ সিদ্ধ হইবার নহে। ভণিতায় দুইজন কবির নাম পাওয়া গিয়াছে। একজনের নাম আমির, পালার বন্দনাগীতিটি তিনিই লিখিয়াছেন, তিনি বলিতেছেন, “আমি অতি বৃদ্ধ হইয়া পড়িয়াছি, তার উপর বিদ্যা বুদ্ধি অতি সামান্য, আসরে